शनिवार, 1 अक्तूबर 2016
জলকণা
কখনো সময়ের ফাঁকে জেনে রেখো
এই ব্যস্ত শহরে
এতোটুকু অবসরের জন্যে
হন্যে হয়ে থাকা বিকেল গুলোয়
তুমি আমার ছিলে না …
জলকনার আজ মন খারাপ । মন খারাপের দিন গুলো খুব
একা কাটে বলেই হয়তো জলকনার বিছানায় রাখা স্পাইরাল
বাইন্ডিং করা খাতার পাতায় পাতায় ভরা অদ্ভূত সব পংক্তি ।
হয়তো তা কখনোই কবিতা নয় , জলকনা কবিতার অত হিসেব
জানে না , মাত্রা , চরণ নির্মানেও হয়তো ভুল থাকে , তবু
জল লিখে লিখে খাতা ভরিয়ে ফেলে … অনেক আগের
কোন এক সোনা ঝরা সন্ধ্যায় সমুদ্রের
জলে ভাসিয়ে দিয়েছিলো এক কাঁচের
শিশিতে ভালো লাগার মানুষকে উদ্দেশ্য করে মনের
নিংড়ানো আবেগ , জলকনা সবসময় চাইতো ওর
জীবনে কোন মিরাকল ঘটুক , ওর চাওয়া নিখাঁদ
ছিলো ঠিকই কিন্তু সময় আজকাল বড় পানশে , ডিজিটাল এর
যুগে নাটকীয়তা হয়তো ঘটে কিন্তু রূপকথার
মতো তো নয়ই !
জলকনার অতশত ভাববার প্রয়োজন ছিলো না , সে শুধু
অপেক্ষায় থাকতো উত্তরের , প্রাণপনে বুকের
মাঝে একটা স্বপ্নকে বেঁধে রেখেছিলো ..
উত্তর আসবে নিশ্চয়ই !
যেদিন গুলোতে পরম সত্যিটা মনের
আশেপাশে গুনগুনিয়ে যেতো সেদিন
গুলোতে জলকনার ভারী থমথমে থাকতো মুখ আর
ভারী হতে থাকতো সেই খাতা !
জলকনার প্রিয় বন্ধুটির নাম সমুদ্র , দুজনের পরিচয়
অন্তর্জালের কোন এক বকর বকর বাক্সে , আজ পর্যন্ত
দেখা হয়নি তাদের , জলের তাতে খুব দুঃখ যদিও সমুদ্র
গা করে না , জলকনা যখনি সাক্ষাত প্রসঙ্গ তুলে সমুদ্র
কীবোর্ডে ঝড় তুলে না দেখা হবার সুফল
লিখে লিখে জলকনার ল্যাপটপের স্ক্রীণ
ভরে ফেলে !
সমুদ্র খুব বাউন্ডুলে , মাঝে মাঝেই কই কই যেন ডুব
দেয় , একমাত্র বন্ধুটির এরকম আচরণে জলকনার
বিরক্তি লাগে খুব … অভিমানে মন ভারী হয়ে যায় ..
হবেই বা না কেন ? ওর কি দশটা পাঁচটা বন্ধু আছে আর ?
সমুদ্রের খুব ভাব বেড়েছে , জলকনার মেজাজ
খিঁচে , বিগড়ে যায় , ডুবন্ত সমুদ্রের পাত্তা নেই !
তার ও কদিন বাদে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে আসে জল ।
একবিকেলে ওর রুমের গরাদ ছাড়া জানালায়
দাঁড়িয়ে কাকচক্ষুর মত জলে টুপটুপ পুকুরের
পাড়টা দেখে বসার লোভ হয় খুব ! গ্রামে জলকনাদের
খুব নাম ডাক , এখনো আগে পিছে মানুষের লাইন
পড়ে যায় ওরা গেলে ! এই বিকেলটা কেমন
করে ফাঁকা হলো কে জানে ?
জল পুকুর পাড়ে গিয়ে বসে থাকে ! সমুদ্রের জন্য
মনের ভেতর ঝড় উঠে খুব , ছেলেটা খুব খারাপতো !
সব বোঝে তবু কিছু বলে না কেন ?
হঠাত্ বাঁধ ভাঙ্গে চোখের নদী ! হাঁটুতে মুখ
গুঁজে মনটাকে শান্ত করার ব্যর্থ চেষ্টায় ক্লান্ত জল
পুকুরের পানি দেখে চমকে ওঠে ! ওতে শুধু ওর
ছায়া নয় , ওখানে আরো কেউ আছে !!
ছায়া হাত বাড়িয়ে দেয় , জল ও কী ভেবে হাত
বাড়ায় …তারপর … জলকনার বাড়িতে শোকের মাতম
ওঠে ! জলকনা যে অন্যরকম মানুষ তা কি আর সবাই
জানতো ? জলকনা যে জলের
মেয়ে সেকথা ভুলেছিলো সবাই একমুহুর্তের জন্য আর
তখনি মেয়ে মিশে গেলো জলে !
গভীর রাতে জলকনা স্থলের পৃথিবী দেখে আর
সারাবেলা জলের !
ওদিকে সমুদ্র জলের সাথে কথা বলতে আকুল
হয়ে আছে , সৈকতে পেয়েছে এক কাঁচের
শিশি ,সাথে ছোট চিরকুট-
‘‘হয়তোবা বারবার ছুটে আসি
বলা হয়না মরমে
নিখুঁত আচড় কেটে
করো তুমি হৃদয়ে ক্ষত নির্মাণ
জলের সায়রে ভেসে তবু
কাছাকাছি আসি
হয়তোবা ভালবাসি…!’’
সমুদ্র জলকে অনেক ভালবাসে , কিন্তু যেদিন
শুনেছিলো জলের
ছেলেমানুষী ভাবনা গুলোকে নিজেকে শামুকের মত
খোলকে আটকে রেখেছিলো !
সত্যি কথা বলতে দোষ নেই , নিষ্পাপ জলের একটু
খানি ভালবাসা পাবার আকাঙ্খা গুলো বেশ উপভোগ করত
সমুদ্র ! কাকতালীয় হোক আর যাই হোক , জলের
ভাসানো কাঁচের শিশি যখন সমুদ্র
হাতে পেলো বুঝতে আর বাকি থাকেনা সমুদ্রের
হয়তো ওদের মাঝে কিছু সত্যিই আছে ! জলকে ছোট
ছোট বার্তা পাঠায় সমুদ্র
THERE IS SOMETHING CALLED MIRACLE , YOU CANT
IGNORE OR EXPLAIN IT…..
জলের দেখা নেই ! সমুদ্র কষ্ট পায় , রাতের পর রাত পিসির
স্ক্রীণে তাকিয়ে থাকে এই বুঝি জল এলো ! কিন্তু
অভিমানী জলকন্যার দেখা মেলে না !
সমুদ্রের ইচ্ছে করে ছুটে বেড়িয়ে যেতে ,
কোথায় তুমি জলকনা ? কোথায় ??
হতচ্ছাড়া চোখের জলে সমুদ্রের বালিশ ভিজে যায় ,
ঝাপসা হয়ে যায় বইয়ের পাতা !
জলজোছনার রাতে জলকণা স্থলে ফিরে আসে ।
জোছনার আগের রাতে জলপৃথিবীটা কেমন অসহ্য
ঠেকতে থাকে জলকণার কাছে , সব ওলট পালট লাগে ,
জলের ভেতরে ঝড় ওঠে , ঝড়ের কারণটা অবশ্যিই
সমুদ্র । কোথাকার কোন অপরিচিত একজনের
জন্যে অপেক্ষা করতে করতে অতি আপন
সমুদ্রকে কাছে টেনেও টানে নি , সমুদ্র ও
ঠেলেছে দূরে কিন্তু
সে রাতে জলকনা বুঝতে পারে যার জন্য
এতো আয়োজন সে সমুদ্রই , সমুদ্র ছাড়া আর কেউ
নয় ।
জলের গ্রামের বাড়ীর সেই পুকুরের শান
বাঁধানো ঘাটে জলজোছনার গভীর রাতে এক সুপুরুষ
বসে ছিলো , তার চোখেও জলের খেলা !
জল তখনো ভাবেনি তার অতি ভালবাসার সমুদ্র তার সামনেই
বসে আছে ! সমুদ্র চোখে জল নিয়ে আবেগে দু হাত
বাড়ায় , জলকণা আমার ঘাট হয়েছে , কানে ধরছি আর ডুব
দেবো না ! সেকি ! আমায় চিনতে পারো নি ? আমি সমুদ্র !
জল ছাড়া কি সমুদ্র বাঁচে ?
জলকণা একবার হাসে , একবার কাঁদে ! আনন্দ অশ্ম্রু
জোছনার নীল আলোয় চিক চিক করতে থাকে !
***
নীরা এই সমস্ত আবোল তাবোল শুধু তোমার পক্ষেই
লেখা সম্ভব ! এটা কি হলো , রূপকথা না কি ?ধ্যুত্ টাইম নষ্ট !!
ছোট্ট করে মেইল পাঠালো সায়ন ।
নীরার চোখের জলে তখন ল্যাপটপের
স্ক্রীনে থাকা ছোট ছোট লেখা গুলো অস্পষ্ট হয় !
নীরা চোখ মুছতেই তা আবার জলে ভরে যায় ,
পৃথিবীতে একমাত্র সায়নই
হয়তো আছে যে তাকে এতো কাঁদানোর অধিকার
রাখে ! পাল্টা মেইলের উত্তর পাঠায় নীরা ..
কোন একদিন
এক সোনা ঝরা বিকেলে
সমুদ্রের পাড়ে বসে
একটু কি তোমার দৃষ্টি খুঁজবে আমায় ?
একটু কি ঝরাবে জল ?
একটু কি ভাববে ,
কেউ চেয়েছিল একসাথে থাকতে এই বিকেলে …
ভালবেসেছিল বলে …
মেইল পেয়ে খানিক্ষণ হাসে সায়ন ! নাহ্ মেয়েটা পাগল
আছে , এই পাগল মেয়েটাকে ও
কতোটা ভালবাসে তা কি করে বলবে ও ? ওর
তো এতো কাব্য আসে না !
ধুর সব ভালবাসায় কাব্য লাগে না ! হাসতে হাসতে নীরার
মেইলের উত্তর দেয় সায়ন
দেখো , আমার অতো কাব্য আসে না , রুপকথার নায়কের
মতো রোমান্টিকতাও নাই আমার , তবে বলি কি সমুদ্র
ধারে একা থাকার চেয়ে জলকণার সাথে বিকেলে আমার
ছোট ফ্ল্যাটের বারান্দায় ট্রাফিক জ্যাম দেখা মনে হয় খুব
পছন্দ হবে আমার ! বাকিটা জলকণার ইচ্ছে !
নীরা রিপ্লাই পেয়ে হাসে … কিন্তু ওর
চোখে পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র জল …
হয়তো বা এতো সুন্দর কোনো দৃশ্যের জন্যেই
পৃথিবী থেকে এখনো ভালবাসা মুছে যায় নি !-
सदस्यता लें
टिप्पणियाँ भेजें (Atom)
कोई टिप्पणी नहीं:
एक टिप्पणी भेजें