शनिवार, 1 अक्तूबर 2016
Freedom Fighter from Narkelbaria
Titu Mir was born as Syed Mir Nisar Ali on 27 January 1782 (14 Magh 1182 in Bengali calendar), in Chandpur village, in North 24 Parganas district (currently in West Bengal, India). His father was Syed Mir Hassan Ali and mother was Abida Ruqayya Khatun.
Titu Mir’s education began in his village school, after which he moved to a local Madrassa. By the time he was 18 years of age, he had become a Hafiz of the Qur’an and a scholar of the Hadithand the Muslim traditions. He was also accomplished with Bengali, Arabic, and Persian languages. During this time he came under the influence of several Wahhabi seers, who preached a mixture of militant Islam and anti-colonial thought and saw both religious and political reform as in Bengal of that time.He was a disciple of Syed Ahmad Barelvi whose teachings of struggle against non Muslim oppression influenced his thoughts.
Titu Mir opposed a number of discriminatory measures in force at that time which included taxes on the wearing of beards and on mosques. The rift between Titu Mir and his followers on one side, and the local Zamindars supported by the British rulers on the other side, continued to widen, and armed conflict broke out at several places. Titu Mir had himself belonged to a “peyada” or martial family and himself had served under a Zamindar as a ‘lathial or ‘lethel’, a fighter with the quarterstaff or lathi, (which in Bengal is made of bamboo, not wood) and he was actively training his men in hand to hand combat and the use of the lathi. This weapon in skilled hands is deadly against anything except projectile weapons. He thus started military training inside the Mosques and Madrassahs. Since his army was mostly made up of poor peasants, they had no horses as cavalry.So they also started to steal horses from the stables of the Zamindars and from the British Police Stations. To face the situation and to give protection to the peasants Titu Mir formed a “Mujahid”force and trained them in lathi and other indigenous arms. The increasing strength of Titu Mir alarmed the zamindars who however attempted involve the British in their fight against him. Being instigated by the zamindar of Gobardanga, Davis, the English kuthial (factor) of Mollahati, advanced with his force against Titu Mir, but were routed. Titu Mir filed a complain to the government of East India Company against the oppression of the zamindars, but to no result. The followers of Titu Mir, believed to have grown to 15,000 by that time, readied themselves for prolonged armed conflict, and they built a fort of bamboo at Narikelbaria, near the town of Barasat. This was surrounded by a high double curtain wall of bamboo stakes filled in with mud cladding and sun-baked. Titu Mir declared independence from the British, and regions comprising the current districts of 24 Parganas, Nadia and Faridpur came under his control. The private armies of the Zamindars and the forces of the British met with a series of defeats at the hands of his men as a result of his strike-and-retreat guerrilla tactics.
Finally, the British forces, led by Lieutenant Colonel Stewart consisting of 100 cavalry, 300 native infantry and artillery with two cannons, mounted a concerted attacks on 14 November 1831, on Titu Mir and his followers. Armed with nothing more than the bamboo quarterstaff and Lathi and a few swords and spears, Titu Mir and his forces could not withstand the might of modern weapons, and were overwhelmed. The bamboo castle was destroyed, and Titu Mir was killed along with several of his followers.
The commanding officer of the British forces noted his opponent’s bravery in dispatches, and also commented on the strength and resilience of bamboo as a material for fortification, since he had had to pound it with artillery for a surprisingly long time before it gave way. After a long-drawn trial, Golam Rasul, Titumir’s nephew and second in command was hanged and some 350 others were sentenced to transportation for life. (From Wikipedia)
আত্মঅনুভূতি
জীবনের রং খুজতে গিয়ে
নিজের রং টাই হারিয়ে ফেলেছি।
অনেক হারিয়েছি,কিছু পাবার আশায়…
সব হারানোর পর পাওয়ার বেলায় দেখি
“”Game Over””….
তাই এখন বুজলাম,
পাওয়ার অসমাপ্তিতেই
চাওয়ার সমাপ্তি ঘটে””…….
নারী
প্রত্যেক সফল পুরুষের পিছনে একজন নারীর অবদান থাকেই….একজন সৎসভ্য,আদর্শ নারীই পারে পুরুষ কে সুশৃংঙ্খল জীবন গঠনে সহায়তা করতে….
-
জলকণা
কখনো সময়ের ফাঁকে জেনে রেখো
এই ব্যস্ত শহরে
এতোটুকু অবসরের জন্যে
হন্যে হয়ে থাকা বিকেল গুলোয়
তুমি আমার ছিলে না …
জলকনার আজ মন খারাপ । মন খারাপের দিন গুলো খুব
একা কাটে বলেই হয়তো জলকনার বিছানায় রাখা স্পাইরাল
বাইন্ডিং করা খাতার পাতায় পাতায় ভরা অদ্ভূত সব পংক্তি ।
হয়তো তা কখনোই কবিতা নয় , জলকনা কবিতার অত হিসেব
জানে না , মাত্রা , চরণ নির্মানেও হয়তো ভুল থাকে , তবু
জল লিখে লিখে খাতা ভরিয়ে ফেলে … অনেক আগের
কোন এক সোনা ঝরা সন্ধ্যায় সমুদ্রের
জলে ভাসিয়ে দিয়েছিলো এক কাঁচের
শিশিতে ভালো লাগার মানুষকে উদ্দেশ্য করে মনের
নিংড়ানো আবেগ , জলকনা সবসময় চাইতো ওর
জীবনে কোন মিরাকল ঘটুক , ওর চাওয়া নিখাঁদ
ছিলো ঠিকই কিন্তু সময় আজকাল বড় পানশে , ডিজিটাল এর
যুগে নাটকীয়তা হয়তো ঘটে কিন্তু রূপকথার
মতো তো নয়ই !
জলকনার অতশত ভাববার প্রয়োজন ছিলো না , সে শুধু
অপেক্ষায় থাকতো উত্তরের , প্রাণপনে বুকের
মাঝে একটা স্বপ্নকে বেঁধে রেখেছিলো ..
উত্তর আসবে নিশ্চয়ই !
যেদিন গুলোতে পরম সত্যিটা মনের
আশেপাশে গুনগুনিয়ে যেতো সেদিন
গুলোতে জলকনার ভারী থমথমে থাকতো মুখ আর
ভারী হতে থাকতো সেই খাতা !
জলকনার প্রিয় বন্ধুটির নাম সমুদ্র , দুজনের পরিচয়
অন্তর্জালের কোন এক বকর বকর বাক্সে , আজ পর্যন্ত
দেখা হয়নি তাদের , জলের তাতে খুব দুঃখ যদিও সমুদ্র
গা করে না , জলকনা যখনি সাক্ষাত প্রসঙ্গ তুলে সমুদ্র
কীবোর্ডে ঝড় তুলে না দেখা হবার সুফল
লিখে লিখে জলকনার ল্যাপটপের স্ক্রীণ
ভরে ফেলে !
সমুদ্র খুব বাউন্ডুলে , মাঝে মাঝেই কই কই যেন ডুব
দেয় , একমাত্র বন্ধুটির এরকম আচরণে জলকনার
বিরক্তি লাগে খুব … অভিমানে মন ভারী হয়ে যায় ..
হবেই বা না কেন ? ওর কি দশটা পাঁচটা বন্ধু আছে আর ?
সমুদ্রের খুব ভাব বেড়েছে , জলকনার মেজাজ
খিঁচে , বিগড়ে যায় , ডুবন্ত সমুদ্রের পাত্তা নেই !
তার ও কদিন বাদে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে আসে জল ।
একবিকেলে ওর রুমের গরাদ ছাড়া জানালায়
দাঁড়িয়ে কাকচক্ষুর মত জলে টুপটুপ পুকুরের
পাড়টা দেখে বসার লোভ হয় খুব ! গ্রামে জলকনাদের
খুব নাম ডাক , এখনো আগে পিছে মানুষের লাইন
পড়ে যায় ওরা গেলে ! এই বিকেলটা কেমন
করে ফাঁকা হলো কে জানে ?
জল পুকুর পাড়ে গিয়ে বসে থাকে ! সমুদ্রের জন্য
মনের ভেতর ঝড় উঠে খুব , ছেলেটা খুব খারাপতো !
সব বোঝে তবু কিছু বলে না কেন ?
হঠাত্ বাঁধ ভাঙ্গে চোখের নদী ! হাঁটুতে মুখ
গুঁজে মনটাকে শান্ত করার ব্যর্থ চেষ্টায় ক্লান্ত জল
পুকুরের পানি দেখে চমকে ওঠে ! ওতে শুধু ওর
ছায়া নয় , ওখানে আরো কেউ আছে !!
ছায়া হাত বাড়িয়ে দেয় , জল ও কী ভেবে হাত
বাড়ায় …তারপর … জলকনার বাড়িতে শোকের মাতম
ওঠে ! জলকনা যে অন্যরকম মানুষ তা কি আর সবাই
জানতো ? জলকনা যে জলের
মেয়ে সেকথা ভুলেছিলো সবাই একমুহুর্তের জন্য আর
তখনি মেয়ে মিশে গেলো জলে !
গভীর রাতে জলকনা স্থলের পৃথিবী দেখে আর
সারাবেলা জলের !
ওদিকে সমুদ্র জলের সাথে কথা বলতে আকুল
হয়ে আছে , সৈকতে পেয়েছে এক কাঁচের
শিশি ,সাথে ছোট চিরকুট-
‘‘হয়তোবা বারবার ছুটে আসি
বলা হয়না মরমে
নিখুঁত আচড় কেটে
করো তুমি হৃদয়ে ক্ষত নির্মাণ
জলের সায়রে ভেসে তবু
কাছাকাছি আসি
হয়তোবা ভালবাসি…!’’
সমুদ্র জলকে অনেক ভালবাসে , কিন্তু যেদিন
শুনেছিলো জলের
ছেলেমানুষী ভাবনা গুলোকে নিজেকে শামুকের মত
খোলকে আটকে রেখেছিলো !
সত্যি কথা বলতে দোষ নেই , নিষ্পাপ জলের একটু
খানি ভালবাসা পাবার আকাঙ্খা গুলো বেশ উপভোগ করত
সমুদ্র ! কাকতালীয় হোক আর যাই হোক , জলের
ভাসানো কাঁচের শিশি যখন সমুদ্র
হাতে পেলো বুঝতে আর বাকি থাকেনা সমুদ্রের
হয়তো ওদের মাঝে কিছু সত্যিই আছে ! জলকে ছোট
ছোট বার্তা পাঠায় সমুদ্র
THERE IS SOMETHING CALLED MIRACLE , YOU CANT
IGNORE OR EXPLAIN IT…..
জলের দেখা নেই ! সমুদ্র কষ্ট পায় , রাতের পর রাত পিসির
স্ক্রীণে তাকিয়ে থাকে এই বুঝি জল এলো ! কিন্তু
অভিমানী জলকন্যার দেখা মেলে না !
সমুদ্রের ইচ্ছে করে ছুটে বেড়িয়ে যেতে ,
কোথায় তুমি জলকনা ? কোথায় ??
হতচ্ছাড়া চোখের জলে সমুদ্রের বালিশ ভিজে যায় ,
ঝাপসা হয়ে যায় বইয়ের পাতা !
জলজোছনার রাতে জলকণা স্থলে ফিরে আসে ।
জোছনার আগের রাতে জলপৃথিবীটা কেমন অসহ্য
ঠেকতে থাকে জলকণার কাছে , সব ওলট পালট লাগে ,
জলের ভেতরে ঝড় ওঠে , ঝড়ের কারণটা অবশ্যিই
সমুদ্র । কোথাকার কোন অপরিচিত একজনের
জন্যে অপেক্ষা করতে করতে অতি আপন
সমুদ্রকে কাছে টেনেও টানে নি , সমুদ্র ও
ঠেলেছে দূরে কিন্তু
সে রাতে জলকনা বুঝতে পারে যার জন্য
এতো আয়োজন সে সমুদ্রই , সমুদ্র ছাড়া আর কেউ
নয় ।
জলের গ্রামের বাড়ীর সেই পুকুরের শান
বাঁধানো ঘাটে জলজোছনার গভীর রাতে এক সুপুরুষ
বসে ছিলো , তার চোখেও জলের খেলা !
জল তখনো ভাবেনি তার অতি ভালবাসার সমুদ্র তার সামনেই
বসে আছে ! সমুদ্র চোখে জল নিয়ে আবেগে দু হাত
বাড়ায় , জলকণা আমার ঘাট হয়েছে , কানে ধরছি আর ডুব
দেবো না ! সেকি ! আমায় চিনতে পারো নি ? আমি সমুদ্র !
জল ছাড়া কি সমুদ্র বাঁচে ?
জলকণা একবার হাসে , একবার কাঁদে ! আনন্দ অশ্ম্রু
জোছনার নীল আলোয় চিক চিক করতে থাকে !
***
নীরা এই সমস্ত আবোল তাবোল শুধু তোমার পক্ষেই
লেখা সম্ভব ! এটা কি হলো , রূপকথা না কি ?ধ্যুত্ টাইম নষ্ট !!
ছোট্ট করে মেইল পাঠালো সায়ন ।
নীরার চোখের জলে তখন ল্যাপটপের
স্ক্রীনে থাকা ছোট ছোট লেখা গুলো অস্পষ্ট হয় !
নীরা চোখ মুছতেই তা আবার জলে ভরে যায় ,
পৃথিবীতে একমাত্র সায়নই
হয়তো আছে যে তাকে এতো কাঁদানোর অধিকার
রাখে ! পাল্টা মেইলের উত্তর পাঠায় নীরা ..
কোন একদিন
এক সোনা ঝরা বিকেলে
সমুদ্রের পাড়ে বসে
একটু কি তোমার দৃষ্টি খুঁজবে আমায় ?
একটু কি ঝরাবে জল ?
একটু কি ভাববে ,
কেউ চেয়েছিল একসাথে থাকতে এই বিকেলে …
ভালবেসেছিল বলে …
মেইল পেয়ে খানিক্ষণ হাসে সায়ন ! নাহ্ মেয়েটা পাগল
আছে , এই পাগল মেয়েটাকে ও
কতোটা ভালবাসে তা কি করে বলবে ও ? ওর
তো এতো কাব্য আসে না !
ধুর সব ভালবাসায় কাব্য লাগে না ! হাসতে হাসতে নীরার
মেইলের উত্তর দেয় সায়ন
দেখো , আমার অতো কাব্য আসে না , রুপকথার নায়কের
মতো রোমান্টিকতাও নাই আমার , তবে বলি কি সমুদ্র
ধারে একা থাকার চেয়ে জলকণার সাথে বিকেলে আমার
ছোট ফ্ল্যাটের বারান্দায় ট্রাফিক জ্যাম দেখা মনে হয় খুব
পছন্দ হবে আমার ! বাকিটা জলকণার ইচ্ছে !
নীরা রিপ্লাই পেয়ে হাসে … কিন্তু ওর
চোখে পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র জল …
হয়তো বা এতো সুন্দর কোনো দৃশ্যের জন্যেই
পৃথিবী থেকে এখনো ভালবাসা মুছে যায় নি !-
নারী মর্যাদা
একটা নারীর যখন জন্ম হয়, ইসলাম বলে -“যার ঘরে
প্রথমে কন্যা সন্তান হয় সেই ঘর বরকতময়”।
নারী যখন যুবতী হয়,
ইসলাম ঘোষনা দেয় – “যে তার
মেয়েকে সঠিকভাবে লালন পালন
করে ভাল পাত্র দেখে বিয়ে দেয় তার
জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।
নারী যখন বিবাহিত, ইসলাম বলে –
“সেই পুরুষই সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর
কাছে উত্তম”।
নারী যখন সংসারী, ইসলাম বলে –
“স্ত্রীর দিকে দয়ার
দৃষ্টিতে তাকানো সওয়াবের কাজ।
এমনকি স্ত্রীকে আদর করে মূখে এক
লোকমা খাবার তুলে দেয়াও”।
নারী যখন গর্ভবতী, ইসলাম বলে –
“গর্ভাবস্থায় যে নারী মারা যায়
সে শহীদের মর্যাদা পায়”।
নারী যখন মা, ইসলাম বলে –
“মায়ের পদ তলে সন্তানের জান্নাত।
ইসলাম যখন নারীকে যথাযথ মর্যাদা ও
সম্মান দিয়েছে , তার সুষম অধিকার ও
নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে ,
তাকে আদর্শ একটি পরিবার ও সমাজের
কারিগর
বানিয়েছে সেখানে ইসলামিক ধ্যান
ধারনা বাদ দিয়ে কিছু তথাকথিত
আধুনিক , নারীবাদী,
ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী চিৎকার
করছে নারীর সমান অধিকার, নারীর
ক্ষমতায়ন , নারীর ক্যরিয়ার ইত্যাদির
নামে আসলে নারীকে অসম্মানিত করতে,
নিরাপদহীন করতে, অর্থ ও খ্যাতির
নামে নারীদের পণ্য বানিয়ে কলঙ্কিত
করতে এবং কলুষতা ছড়িয়ে আমাদের
পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থায় ভাঙ্গন
ধরাতে ।
আর এতে আপনি, আমি, আমাদের মা বোন
সবাই অসুখী , অশালীন , অকল্যাণকর ,
অন্যায্য জীবন ব্যবস্থার দ্বারপ্রান্তে ।
আসুন আমরা সঠিক পথে চলি সঠিক
কথাকে ছড়িয়ে দিই মানবের মাঝে। -
একজন পাগল, যে বদলে দিয়েছিল পাগলের সংজ্ঞা
পরিবারের মধ্যে তিনি ছিলেন ২য়। মানসিক সমস্যার পূর্ব ইতিহাস বিদ্যমান ছিল পরিবারে। তার আপন খালাই ছিলেন মানসিক বিকারগ্রস্থ। আর কিশোর বয়সেই মৃগীরোগের লক্ষণ প্রকাশিত হবার পর অল্প বয়েসে মারা যান তার বড়ভাই। তিনিসহ অপর তিন ছোটভাইয়েরও মৃত্যু হয় মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা গ্রহণ করা অবস্থাতেই। যাদের মধ্যে দু’জনের মৃত্যুর কারণ আত্মহত্যা।
চাকুরীজীবনে প্রবেশের পর ক্রমাগত বাড়তে থাকা মর্মপীড়া সহ্য করতে না পেরে কর্মক্ষেত্র ছেড়ে বাড়ী ফিরে আসার পর চব্বিশ বছর বয়সে তিনি নিজেও নিজ কক্ষের জানালা থেকে ঝাপিয়ে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করে বাড়ী ফিরে আসার পর তিনি এতটাই ভেঙ্গে পড়েন যে, কথা বলা বন্ধ করে দেন। চিকিৎসাগ্রহণ অবস্থাতেই তিনি আক্রান্ত হন বিষন্নতা ও প্যারানইয়ায়(একপ্রকার মস্তিষ্ক বিকৃতি জনিত রোগ)। তিনি অলীক বিক্ষণেও আক্রান্ত ছিলেন। শারিরীক ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ার অবস্থায় এরপরের তিনটি বছর তিনি কাটিয়ে দেন বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। এ দীর্ঘ সময়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মচারীদের দ্বারা নানাভাবে ক্রমাগত শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হন তিনি। যা তার মনে গভীরভাবে রেখাপাত করে। মানসিক রোগগ্রস্থদের প্রতি একধরনের নেতিবাচক ধারণা প্রবল ছিল তৎকালে। তাদেরকে অস্বাভাবিক কোনোকিছুর প্রভাবে প্রভাবিত বলে ধারণা করা হতো। পরবর্তীতে অনেকটা স্বপ্রোনোদিত হয়েই তিনি সুস্থ্য হয়ে ওঠেন এবং তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নিয়ে তিনি লিখেন একটি আত্মজীবনী, বিশেষ করে হাসপাতালে উৎপীড়িত হওয়ার ঘটনাগুলো, যেগুলো তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।
বলছিলাম ‘ক্লিফোর্ড উইটিংহাম বিয়ার্স’ এর (১৮৭৬-১৯৪৩) কথা। যিনি “A mind that found itself” বইয়ের লেখক। এই বইটি ছিল ইতিহাসের এক মাইলস্টোন। অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ভাষায় তিনি বলতে চেয়েছেন যে, মানসিক রোগীরাও মানুষ। বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর আলোড়ন সৃষ্টি হয় গোটা আমেরিকায়। নড়ে-চড়ে বসেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। এরপরই মানসিকভাবে অসুস্থ্য ব্যক্তিদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানসম্মত চিন্তার সূত্রপাত হয়। ১৯০৮ সালে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগীতায় কানেকটিকাটে বিয়ারস গড়ে তোলেন ‘ন্যাশনাল কমিটি ফর মেন্টাল হাইজিন’ নামক প্রতিষ্ঠান, যা বর্তমানে ‘মেন্টাল হেলথ আমেরিকা’ নামে পরিচিত। এর উদ্দেশ্য ছিল মানসিক রোগের কারণ সংক্রান্ত গবেষণায় ও মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ট্রেনিঙয়ের জন্যে অর্থ সহায়তা জোগাড়। “Mental Hygiene and Understanding the Child” তারা একটি পাক্ষিক ম্যাগাজিনও প্রকাশ করেন। এর ফলে বিভিন্ন প্রদেশেও সচেতন নাগরিকরা অনুরুপ কমিটি গড়ে তোলেন। এক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে সহায়তা করেছিলেন জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রি বিভাগের অধ্যাপক এ্যাডলফ্ মেয়ার। ‘Mental Hygiene’ শব্দটি তিনিই সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন এবং এ বিষয়ের উপর মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ লেখালেখি তার বিশেষ অবদান। ব্যক্তিজীবনে তিনি একজন বিখ্যাত মনোচিকিৎসক ছিলেন।
নিরলস পরিশ্রম ও সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির ক্রমাগত প্রচেষ্টার ফলস্বরুপ ১৯৩০ সালে বিয়ার্স-এর তত্বাবধানে ‘ওয়াশিংটন ডিসি’তে অনুষ্ঠিত হয় ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস ফর ন্যাশনাল হাইজিন, যাতে ৫১টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। এই সম্মেলনকে বিয়ার্স-এর জীবনের সর্বোচ্চ চূড়া হিসেবে গণ্য করা হয়। মানবতার জন্য বিশেষ অবদয়ান রাখায় পরবর্তীতে ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে তাঁকে একটি সম্মানজনক ডিগ্রি প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, তিনি এই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছিলেন।
ব্যক্তিজীবনে বিয়ার্স ছিলেন নিঃসন্তান। স্ত্রী ক্লারা লুইস জিপসন ও বিয়ার্স মানসিক এই সমস্যার ইতিহাস থাকায় সন্তান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
১৯৪৩ সালে সাতষট্টি বয়সে রোডে দ্বীপের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিয়ার্স-এর জীবনাবসান ঘটে। বিয়ার্স চলে গেছেন তবে তার স্বপ্নের সাফল্যগাথা লিপিবদ্ধ রয়ে গেছে ইতিহাসে। মানসিক সীমাবদ্ধতার কাছে হার না মেনে আজীবন লড়ে গেছেন তিনি ।
এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। মানসিক স্বাস্থ্য বিজ্ঞান স্থান করে নিয়েছে জাতীয় জীবনের অপরিহার্য বিষয়াবলির সাথে। সমাজের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে কারো কারো যে সীমাবদ্ধতা, তার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে গবেষণা করে বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলোর সমাধান করতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন সমাজবিজ্ঞানী-মনোবিজ্ঞানীরা।
সভ্যতা এগিয়েছে, বিজ্ঞান তার বিস্ময়কর সব আবিষ্কার দিয়ে প্রতিদিনই চমকে দিচ্ছে বিশ্বকে। মানবমনের রহস্য ও গতি-প্রকৃতি নিয়েও কম হয়নি গবেষণা। তবে মানুষ মানুষকে জেনেছে সামান্যই।
IF U DON’T STOP THIS….WHO WILL?
‘পরীক্ষা তারাতারি শেষ হয়েছিল তাই আমার আরেক বান্ধুবিকে সাথে নিয়ে ক্যান্টিনে চলে গেলাম খেতে। ক্যন্টিনের খাবারের টেবিল ২ টা এর একটা অনেক উচু তাই ওপাশে কেউ থাকলে দেখা যায় না। আমরা সিংগারা অর্ডার করলাম।এরমধ্যেই পাশের উচু টেবিলের পেছন থেকে ছোট একটা বাচ্চার গোঙ্গানির শব্দ,খুব পরিচিত কন্ঠ। ছোট টেবিল থেকে মাথা বের করে তাকিয়ে দেখি ক্যান্টিনের মধ্যবয়সী এক দোকানদার আমাদের এক ম্যাডামের ৪বছরের মেয়ের সাথে কিছু একটা করছে।
প্রতিবাদ করার মত সাহস আমার ছিল না তাই কোন রকম রাগ না দেখিয়ে মেয়েটিকে আস্তে করে ডেকে বললাম ম্যাডাম ওকে ডাকছে।আমরা বাচ্চাটাকে নিয়ে ম্যাডামের কাছে গেলাম আর সব ঘটনা খুলে বললাম। ম্যাডাম কষ্ট পেলেন। তবে তিনিও হয়ত ভয় পেয়েছেন তাই লোকটাকে কিছুই বললেন না আর আমাদেরও বললেন অন্য কাউকে বিষয়টা বলতে না’
গতদিন এই ঘটনা বলছিল আমার ছাত্রী। শুনে প্রথমে খুব খারাপ লাগছিল কিন্তু পরে রাগ হলো।
আমাদের সমাজের প্রতিটি স্তরেই শিশুরা কোন না কোন ভাবে abuse হচ্ছে ।কিন্তু পেপারে ছাপা হচ্ছে না বলে আমাদের কর্ণকুহরে এসব ঘটনা কোন আলোড়নই জাগাতে পারছে না।
গত বছর child এর কোর্সে পড়েছিলাম – সামান্য আঘাত করা , গালি , মানসিক কস্ট , টিটকারি দেয়া,তাচ্ছিল্য করা এই ছোট বিষয় গুলোকেও শিশু মনোবিজ্ঞানীরা child abuse ধরে থাকেন।কারন এই সামান্য আঘাতেই শিশুর জীবনে অনেক বড় ক্ষতি করে যেতে পারে। সেখানে physical abuse শিশুকে জীবনের কোন পরিণতিতে ঠেলে দিতে পারে তা কারোই অজানা থাকার কথা নয়।
সমাজের এসব ঘৃণ্য নরপশুদের কিছু বলার নেই কারন তারা কোন ভাষার ঊর্ধ্বে , তাদেরকে শুধু শাস্তি দিয়েই কিছু বোঝানো সম্ভব । কিন্তু সমাজের আর বাকি মানুষদের কি বলবো ? বাবা-মা ?
একটু সতর্কতা, একটু হেকমতের অভাবে কত শিশু রোজ এভাবে বলি হয়ে যাচ্ছে ভোগ্য পন্য হিসেবে । খবরের কাগজে কালো অক্ষরের ফ্রেমে বন্দি হওয়ার আগে কি কেউ কোন পদক্ষেপ উঠাবে না ?
নিঃশব্দ ভালবাসা
সে অনেক কিছু বুঝতে পারে। আনেক কিছু চিন্তা করতে পারে। অনেক কিছু করতেও পারে। তবে সমস্যা একটাই, সে কথা বলতে পারেনা। বাবা-মা, দুই বোন ও এক ভাই নিয়ে তাদের সংসার। এই ছোট্ট চড়ুই পাখির মত পরিবারটিকে ও জান-প্রান দিয়ে ভালবাসে। দুনিয়াতে বন্ধু ও আপন বলতে আছেত ওরাই। সায়মার হৃদয়ের আকাশ ভরা স্বপ্ন, আদর-স্নেহ সবটুকু তার পরিবার ঘিরে। সপ্তম শ্রেণী পাশ করে অষ্টম শ্রেণীতে পা দিলেও আজও কোন বন্ধু বানাতে পারেনি ও। সহপাঠীদের বন্ধু বানাতে ও কি-না করেছে! হাতে বানানো কার্ড, কলম দিয়ে সহযোগিতা, হোম ওয়ার্ক দেখিয়ে ম্যাম এর হাত থেকে বাঁচানো…। তবে একটিতে সে ব্যর্থ হয়েছে, যে, সে ভাল কথাবাজ না। আসলে সেত কথাই বলতে পারেনা। পরীক্ষার সময় পেছন থেকে জিজ্ঞেস করলে ম্যাম এর চোখ ফাঁকি দিয়ে উত্তর বলে দিতে পারেনা। ক্লাসে মজার গল্প বলতে পারেনা। এজন্যই ওর বন্ধু টেকেনা। তবুও সে চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছে।
ঘরের মানুষ গুলোও ব্যাস্ত। ছোট বোনটা তার বই খাতা নষ্ট করলেও তার মমতা দিয়ে বোনটিকে ক্ষমা করে দেয়। ওর তিন বছরের ছোট বোনটি ওকে নাম ধরে ডাকে, তবু ও কিছু মনে করেনা।
“সায়মা। এই সায়মা। অঙ্কটা বুঝিয়ে দেত।“ বোনের আদেশে মিটি মিটি হাসে সায়মা। খাতা আর কলমটা নিয়ে করে দেয় অঙ্ক। “আরে ধ্যাত! তোকে আমি অঙ্ক করতে বলেছি? অ্যা ? অঙ্কত আমিও মুখস্ত লিখতে পারি। বললাম বুঝাতে।“ “ওমা! একি আশ্চর্য কথা বলছে রাফা! সে যেন জানেনা আমি বোবা?!” বোনের মনের ভাব বুঝতে পেরে রাফা মুখ বাঁকায়। “ও……। ভুলেই গেছি। তুইত কথাই বলতে পারিসনা। তুই যে কেন আছিস! কোন কাজই করতে পারিসনা। ভাইয়া আমাকে একটু অঙ্কটা…।“ বলতে বলতে চলে যায় রাফা। সায়মার হালকা অভিমান হয়। “কে বলল, আমি কিছু পারিনা? আমি শুধু বলতে পারিনা। আর সবই তো পারি।“ ক্রিং ক্রিং ফোনটা বাজছে। কেও উঠাচ্ছেনা কেন? “ রাফা……। ভাইয়া……।“ চিৎকার করতে গিয়ে, ফোঁস ফোঁস শব্দ ছাড়া সায়মার মুখ দিয়ে আর কিছুই বের হলনা। ছোট বেলায় টনসিল খুব মারাত্মক হয়ে যাওয়ায় অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয় বাবা-মা। বাবার শিক্ষকতা পেশায় যতটুকু সম্ভব ছিল, এক কাঁচা প্রায় হাতুড়ে শ্রেণির এক চিকিৎসককে দিয়ে অপারেশনটা করানোর সময় টনসিলের সাথে সায়মার কণ্ঠনালীকেও মারাত্মক ভাবে ফুটো হয়ে যায়। আর চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় সায়মার কথা। অনেকে বলেছিল বিদেশে নিলে ভাল করা যাবে, কিন্তু তা-কি আর সাদ্ধে আছে? “ওহ! ফোনটা বেজেই চলছে। মা কোথায়?“ অতঃপর রিসিভারটা তুলে কানে ঠেকায়। “কি বলবো আমি? আমিতো কিছুই বলতে পারিনা।“ ওপাশ থেকে কেও একজন হ্যালো হ্যালো করছে। হটাৎ টান দিয়ে রিসিভারটা নিয়ে নিলেন মা। বেশ কিছুক্ষন কথা বলে ফোন রেখে, ঠাশ করে করে একটা চড় লাগালেন সায়মার গালে। “তোকেনা বলেছি ফোন ধরতেনা? কথা বলতে পারিসনা, তবে ফোন ধরিস কেন? হ্যাঁ ?” কোন জবাব দেয়ার সামর্থ্য নেই ওর। তাই চুপ করেই থাকে। বারান্দায় দাড়াতেই শুনতে পায়। “ফাগুন অথবা আগুন,
গাঙচিল মিষ্টি বাতাস, আমি সব কিছু বুঝি, তবু বলতে পারিনা, আবার এও সত্যি নয়, কখনো কিছু বলবনা……” পাশের ফ্ল্যাটে টিভি ছেড়েছে বোধয়। দীর্ঘ শ্বাসটা বুক চিঁরে অচানায়কই বেড়িয়ে পরে। এর পরই আবার, সমস্ত খারাপ আচরণ ভুলে ভালবাসতে থাকে পরিবারের মানুষদেরকে। কারণ এরা ছাড়াত তার কেও নেই। “ওমা! গাছের ডালে এটা কি ঝুলছে? ভাইয়ার সখের ঘড়িটা না?” বারান্দার গ্রিলের ফোঁকর গলিয়ে হাত বাড়িয়ে পাশের উঁচু গাছটার নিচু ডাল হতে বহু কষ্টে ঘড়িটা উদ্ধার করে। ভাইয়া বেশ কিছুদিন ধরে খুঁজে পাচ্ছেনা। এখন ওর হাতে দিলে সে যে কতটা খুশি হবে, তা ভেবেই একধরনের রোমান্স জাগে তার মাঝে। দৌরে ছুটে যায় ভাইয়ার রুমে। ভাইয়াকে কিছু বলা লাগেনা। সায়মার হাতে ঘড়িটা দেখে সঙ্গে সঙ্গে তা কেড়ে নিল লাবিব। “ও…। তুই-ই তাহলে এতদিন এটা লুকিয়ে রেখেছিস না?” “সেকি! ভাইয়া এসব কি বলছে?” সায়মার গালে জোরে একটা চড় মেরে ধাক্কা দিয়ে তাকে রুম থেকে বের করে দেয় লাবিব। প্রতিবাদ করতে পারেনা এবার ও সে। কারণ, সে বলতে পারেনা। অভিমানী অশ্রু ঝরে পরে তার শ্যামলা গাল বেয়ে। ভালবাসা এসে মুছে দেয় তা। সায়মা বিশ্বাস করে, যত খারাপ আচরণই করুকনা কেন, তার পরিবার মনে মনে তাকে খুবই ভালবাসে। তবে সমস্যা একটাই, এ ভালবাসার কথা কেও কাউকে বলতে পারেনা। যদিও অন্যরা কথা বলতে পারে, তবুও ওরা ভালবাসি বলতে পারেনা। “কিন্তু কেন? তারা কি এই শব্দটার জন্য আমার মত বোবা?” কলিংবেল এর শব্দে ওর ভাবনা ছুটল। বাবা এসেছে। আনন্দ ভরে ছুটে যায় বাবার কাছে। মুখ দিয়ে বলতে চায় “বাবা এসেছ?” কিন্তু কেমন গাধার মত অদ্ভুত ঘ্যা ঘ্যা ছাড়া কিছুই তার কণ্ঠ দিয়ে বের হয়না। “হাঃ হাঃ হাঃ” হাসিতে গড়িয়ে পরে লাবিব আর রাফা। “সায়মা। তোর গাধাটাকে খাবার দাবার কিছু দিসনা নাকি? রাত-দিন অতো চ্যাঁচ্যাঁয় কেন?” রাফার কোথায় প্রতিবাদ স্বরূপ ওর কণ্ঠ দিয়ে আবার ঘ্যা ঘ্যা আওয়াজ বের হয়। বাবা রেগে যায়। “এই! সারাদিন খালি ঝগড়া। একটা বোবা মেয়েকে নিয়ে তোরা এত চ্যাচাস কেন? বাইরেও চ্যাঁচামেচি, ঘরেও। ভাল্লাগেনা। জীবনটাকে লাথি মারি।“ গজ গজ করতে করতে ভেতরে যান তিনি। সবার চিন্তায় বাবার মাথা একটু হট থাকে। তা সবাই জানে। তাই কারোও গায়ে লাগেনা।তবে সায়মা রেগে যায়।“ যাহ্ আর এই বাসায় থাকবনা। যাদের এত ভালবাসি, তারা কেও আমাকে ভালবাসেনা।“ খোলা দরজা দিয়ে বেড়িয়ে গেল সে। “আরে! আরে! কোথায় যাচ্ছিস? মা দেখ। ভাইয়া যাওনা! ও কই যাচ্ছে?” রাফা চেঁচিয়ে ওঠে। লাবিব ছুটে যায়। সায়মা ৫ তালার সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে থাকে। পেছনে তাকিয়ে দেখে লাবিব ও সিঁড়ি ভাঙ্গছে। আরও দ্রুত সিঁড়ি ভাংতে শুরু করে সায়মা। হটাৎ কিভাবে জানি সিঁড়ির দু-তিন ধাপে মা ফসকে পরে যায় সায়মা। কিছুক্ষন গড়াতে গড়াতে ওর পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে যায়।
চোখ খুলতেই নিজেকে একটি সাদা সাদা রুমে সাদা বিছানায় আবিষ্কার করে সায়মা। ঘার ফিরিয়ে দেখে, তার দু পাশের দুটি বেডে রাফা ও লাবিব শুয়ে আছে। মাথার কাছে মা। তার কণ্ঠ সুন্তে পায় সায়মা। “তুই কেন ওভাবে ঘর থেকে দৌর দিলি মা? দেখ কিভাবে মাথা ঠুকে এক্সিডেন্ট করলি। তোর এতো রক্তক্ষরণ হল যে, লাবিব আর রাফা রক্ত দিতে গিয়ে কাহল হল। আল্লার মেহেরবানি যে তুই বেঁচেছিস। এখন তোর বাবা গেছে ঔষধ আনতে। অমন করলি ক্যান মা? আমাদের কষ্ট লাগেনা বুঝি?” মায়ের কথাগুলো কিসের যেন জট খুলে দিল। সায়মার চোখ ঝাপসা হয়ে গেল। ওর রুদ্ধ কণ্ঠ মুক্ত হয়ে সজোরে বলতে চায়, “আমি শুনতে পেয়েছি। আমার পরিবার আমাকে বলছে, তারা আমাকে ভালবাসে। আমি জানলাম। তবে, খুব নিঃশব্দে।।”
ফেইসবুক ভালবাসা'
একদম বাস্তব এবং আমার সাথেই ঘটা গল্প।আমার ফ্রেন্ডলিস্টে একটা মেয়ে ছিল নিসু নাম। তাকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে নাকি সে আমাকে পাঠিয়ে বন্ধুত্ব হয়েছিল মনে নেই।ওকে প্রায় অনলাইনে দেখতাম।আর আমার একটা অভ্যাস সারাদিন অনলাইনে থাকলেও তেমন কারো সাথেই চ্যাট করি না।এই মেয়েটার সাথেও আমি করিনি।প্রায় অনেক দিন পর মেয়েটাই শুরু করল হাই বলে।সেদিন অনেক কথা হল এবং ওইদিনই ভাল ফ্রেন্ডশীপ হল।'ফ্রেন্ডশীপের প্রস্তাবটা ওই দিয়েছিল।কথার মাঝখানে বলেছিল,আচ্ছা আমরা কি এবার বেস্ট ফ্রেন্ড পারি?আমি বললাম,ওকে। তারপর থেকে অনেক কথা হত। মাঝে মাঝে আমাকে বলতো,ফেইসবুকে তোমার সবচেয়ে ভাল ফ্রেন্ড কে?আমি অন্য কারো নাম বলতাম।যদিও নিসুকে আমি অনেক ভাল ফ্রেন্ড ভাবতাম।কিন্তু ওকে আমি কখনও তা বুঝতে দেইনি। একবার তো ও রাগই করে ফেলেছিল এই বলে যে,আমি এতোদিন ধরে তোমার সাথে কথা বল্ছি,সবকিছু শেয়ার করছি,তাও তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড হতে পারলাম না?আর সবাই তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে গেল?ওইদিন ওর রাগ ভাঙানোর জন্য না পেরে ওকে বলেছিলুম,বিশ্বা স কর নিসু। আমার অনেক বেস্ট ফ্রেন্ড আছে।তার মধ্যে তুমিও একজন।যারপরনাই ওইদিন সে অনেক খুশি হয়েছিল এবং ওর ফোন দিয়ে বলেছিল সময় হলে ওকে একবার ফোন করতে। তারপর থেকে ফোনে অনেক কথা হত।তখনও আমি জানতাম না ও আমার প্রতি দুর্বল কি না। একদিন কেন জানি ইচ্ছে হল ওর সাথে একটু মজা করে দেখা যাক ও আমার প্রতি দুর্বল কি না। আর কি!তাই করলাম।সাথে সাথে ওকে ফোন দিয়ে বললাম,নিসু তুমি কি এখন ব্যস্ত?তোমার সাথে আমার খুব দরকারী কথা আছে।ও বলল,কি কথা?আমি বললাম,একটা কথা। তোমাকে জানাতে চাই এবং আমি জানতে চাই। জানিনা তখন সে কিছু বুঝেছিল কি না।ও আমাকে বলল ও নাকি এখন একটু ব্যস্ত আছে।পরে ও আমাকে ফোন দিবে। প্রায় ১ ঘন্টা পর ও আমাকে ফোন দিল।বলল,এবার বল কি জানতে চাও আর জানাতে চাও? আমি বললাম,নিসু তোমাকে যা বলব তাতে রাগ করবে নাতো?ও বলল,কি যে বল?পৃথিবীর সবার সাথে রাগ করতে পারলেও তোমার সাথে আমি রাগ করতে পারবনা।এবার বল।তারপর আমি বললাম,ওকে নিসু!আমি তোমাকে জানাতে চাই যে,আমি তোমাকে ভালবাসি।আর জানতে চাই তুমি কি আমাকে ভালবাস?প্লিজ সত্যি করে বল নিসু?তখন ও বলল।তুমি কি সত্যি আমাকে ভালবাস? আমি বললাম,কেন নিসু?তোমার কি বিশ্বাস হচ্ছে না?দেখ তুমি,তুমি য দি আমাকে না ভালবাস কাল থেকে ফেইসবুকে আর আসবনা এবং কোথা থেকে কোথায় যাব নিজেও জানি না।তখন ও আমাকে বললো,সেও নাকি আমাকে খুব ভালবাসে।কিন্তু এতোদিন বলতে পারেনি।ও নাকি এইদিনেরই অপেক্ষায় ছিল যেদিন আমি ওকে ভালবাসি বলব।আজ সে খুব সুখি। তাই বললো আমাকে। তারপর অনেকদিন প্রেম চলছে।একদিন আমার ফেইসবুকের একটা ফ্রেন্ড বললো,দোস্ত তোকে একটা নাম্বার দেই।তুই ফোন দিস। চাইলে প্রেমও করতে পারবি।আমি নিতে চাইনি।ও আমাকে জোর করে দিয়েছিল।আর ও যেই নাম্বারটি দিল সেটা হল নিসুর। কিছুটা আঁতকে উঠলাম।তারপর ওর আর কিছু ভালো ফ্রেন্ডের সাথে আমি ফ্রেন্ডশীপ করে সবাইকে একটাই কথা বলেছিলাম যে,দোস্ত একটা প্রেম করতে চাই একটা মেয়ে দাও।সবাই বলল মেয়ে তো দিতে পারব না,তবে নাম্বার দিতে পারি। অনেকে অনেক নাম্বার দিল।তার মাঝে নিসুর নাম্বারও।তারপর একদম পরিষ্কার হলুম ও একটা কল গার্ল। এরপরেও নিশ্চিত হওয়ার জন্য ওকে ফোন দিয়ে সব বললাম।তারপর থেকে সে আমার সাথে আর কথা বলেনি।আমার নাম্বারটা ব্লক দিয়েছিল এবং ফেইসবুক্ফ আমার আইডিটাও।জানিনা এই ঢঙের মধ্যেও ওকে কতটুকু ভালবেসে ফেলেছিলাম।জানি ও আমাকে ধোঁকা দিতে এসেছিল কি না।তবে ওইদিন খুব কষ্ট পেয়েছি।যা আজও মনে পড়লে অনেক কষ্ট পাই। জানিনা এখন সে কোথায় আছে,কার আছে,কেমন আছে।তবে নিসু তোমার চোখে যদি এই গল্পটা পড়েই যায় আর তাতে তুমি বিন্দু পরিমাণ কষ্ট পাও,তবে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।ম াফ করে দিও আমায় আর ভাল থেকো তুমি…
কি দরকার মিষ্টি কথার ছলনায় ফেলে আরেকজনকে ধোঁকা দেয়ার
মেয়ে! ?ধোঁকা দিতে চাও তো!তবে যাও তাদের কাছে,যারা ওয়ান টাইম প্রেম করতে চায় মেয়েদের সাথে।এমন অনেক পুরুষই আছে। আর আমি! হ্যাঁ,আমি হলাম চির প্রেমিক।যে চায় শুধু সারাজীবন নয় মৃত্যুর পরেও যদি তোমাকে পায় তখনও ভালবাসতে।অনন্তক াল ভালবেসে যাবে তোমাকে…
সব ছেলেই এইরকম একটি হাত ধরতে চাই
সব ছেলেই এইরকম একটি হাত ধরতে চাই। যখনই হোক মনে ইচ্ছা আসবেই
হয়তো অনেকে অস্বীকার করবে, তবে সে এইটার আশা করবেই।।১০০% সত্য। কারন আপনি একবারের জন্য হলেও কারো প্রেমে পড়বেনই,পড়তেই হবে।
শুধু যে তোমাকেই ভালবাসি আমি
শুধু যে তোমাকেই ভালবাসি আমি,তুমি কি জান তোমার কথা ভাবলেই কেন জানি চোখের মাঝে শ্রাবণ নামে,জানি হয়ত তুমি আমার নও, জানি তুমি আমার কথা হয়ত আজ ভুল করে ও মনে কর না, কিন্তু আমি যে ভালবেসেছি তোমায় ,তুমি আমাকে না ভালবাসতে পার কিন্তু তুমি আমার কাছে আমার থেকে ও বেশী... আজ সারা টা দিন সব ভাই বোন রা এক সাথে ছিল শুধু আমি ছিলাম এক টা অন্ধকার ঘরের মাঝে,সারা টা দিন কেঁদে কেঁদে কাটিয়েছি....যদি কোন দিন ফিরে আস আমার জিবনে আমি তোমাকে ভালবেসে আপন করে নেব,পুরনো কোন কথা তুলব না,সব ভুলে যাব.....কথা দিলাম...
আমি যে শুধু তোমাকেই ভালবাসি,
আমি যে শুধু তোমাকেই ভালবাসি,
তোমাকেই চাই,
তোমার চেহারা দেখে আমি বলি নি,
ভালবাসি।।
আমি যে মন দিয়ে তোমাকে চিনেছি,
আমার জীবনের সবটুকু পাওয়া,
আমি তোমার মাঝেই পেয়েছি।।
তুমি আমাকে শত বার ফিরে যেতে বললেও,
আমি যাবো না, তবে এভাবেই ভালোবেসে যাবো সব সময়।।"
কেন সবকিছু অসহনীয় মনে হয়
কেন সবকিছু অসহনীয় মনে হয় ?
কুয়াশায় বিচ্ছিন্ন মনে হয়.
সব কিছুর আড়ালে যেন
কিছু একটা ধাক্কা দিয়ে চলে
বুঝতে পারি না ...
শিরা,উপশিরা প্রবাহিত হয়
ঘৃনা,ক্রোধ ,একটা ভিশন দমন নীতি ...
ইচ্ছে হয় ...
চলে যাই..
ভেসে যাই ..
হারিয়ে যাই ..
কোথাও,,অন্য কোথাও
সবুজ আর নীলের ছড়াছড়ি
যারা Facebøøk A Love করেন তারা অবশ্যই পড়বেন ।।।
.
--তোমার একটা পিক দাও তো।
--কেন কি করবা ?
-তোমায় দেখবো আমি।
--আমায় তো তুমি না দেখেই ভালোবেসে ফেলেছিলে।এখন আর দেখে কি হবে?
-জানি না তাও দেখবো।
→→→
শ্রাবনী আর আকাশ এর পরিচয় ফেসবুক এর মাধ্যমে কিছু দিন চ্যাট করার পরই একজনের আরেকজনকে ভালোলেগে যায়।
তারপর
আকাশ প্রথম শ্রাবনীকে ভালোবাসার কথা বলে। শ্রাবনী বলেছিল, "আমি তো দেখতে ভালো না,তোমার ভালো লাগবেনা"। তাও কেন ভালোবাসো????
কিন্তু আকাশ এসব কিছু শুনেনি।সে বলেছে আমি তোমার চেহারাকে না, তোমাকে ভালোবাসি। শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।
→
রিলেশন হবার কয়েক দিন পর শ্রাবনীর পিক চাচ্ছে আজ আকাশ। শ্রাবনীও তার পিক দিল।
কিন্তু শ্রাবনীকে দেখার পর আকাশ এর আর ভালো লাগলো না,সে ভাবলো এই মেয়েকে নিয়ে সবার সাথে মিশা যাবে না। সবার সামনে তার মাথা নিচু হতে যাবে।। শ্রাবনী যে খুব খারাপ তা নয় তবে আকাশ এর সাথে ,তার পরিবারের সাথে যায় না এটা।।
→
তারপর শ্রাবনীকে একটা ম্যাসেজ দেয়↓
"সরি শ্রাবনী, আমার সাথে তোমায় মানায় না,আমার জন্য আরো সুন্দরী মেয়ে লাগবে,তোমার লেভেলএর কোন ছেলেকে তুমি বিয়ে করে নিও"
→→
এর পর আকাশ আর শ্রাবনীর সাথে যোগাযোগ করে নি। ফেসবুক আইডি,মোবাইল নাম্বার সব চেঞ্জ করে ফেলে।
_____________↓
কয়েক বছর পর ,,,,,
আকাশ একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ে এখানে নতুন একটা
মেয়ে ভর্তি হয়েছে। মেয়েটি দেখতে অনেক সুন্দর যে দেখে সে ই ভালোবাসতে চায় এই মেয়েকে। আকাশ অবশ্য একটু বেশিই ভালোবেসে ফেলেছে এই মেয়েকে।।
একদিন ভার্সিটির ক্যাম্পাসে:-
--এই মেঘ,দাড়াও
-হুম,বলেন
--আমি তোমাকে ভালোবাসি,
-আমাকে না আমার সৌন্দর্য কে?
--আমি তোমাকেই ভালোবাসি প্রথম দিন
থেকেই। তোমার চেহারাকে না।
-ও,তাই?
--হুম,আর ভালোবাসা চেহারা না মন দিয়ে
হয়।
-ওহ,,কিন্তু আমার জন্য আপনি যোগ্য না,
--মানে কি?
-আমার জন্য আপনার চেয়ে ভালো,সুন্দর, আর হ্যান্ড সাম ছেলে লাগবে, আমার ফ্যামিলির সাথে আপনাকে মানায় না।
,
,
কথাটা বলেই মেঘ চলে গেল। আকাশ দাঁড়িয়ে রইলো .. ভাবতেছে শ্রাবনীর কথা। আজ তার যেমন কষ্ট লাগতেছে শ্রাবনীর ও তেমন ই কস্ট সেদিন লেগেছিল হয়ত।
হঠাৎ পিছন থেকে মেঘ এর এক বান্ধবী এসে আকাশকে ডাক দিল,
-ভাইয়া কি শ্রাবনীর কথা ভাবতেছেন?
--হ্যা,কিন্তু তুমি কিভাবে জানলা?
-আপনি যাকে মেঘ বলে জানেন,সে ই আসল শ্রাবনী।
--তুমি কিভাবে জানলা?
-ভার্সিটিতে আপনাকে দেখেই ও চিনতে পারে, কারন ফেসবুকে আপনার পিক ছিল। পরে আমায় সব বলেছে।
--তাহলে ওই দিন ওই পিক কার ছিল??
-ওইটা,ওদের কাজের মেয়ের পিক ছিল,আপনাকে টেস্ট করার জন্য সেদিন নিজের পিক না দিয়ে অন্য মেয়ের দিয়েছিল।
--কেন কেন?
-ও দেখতে
চেয়েছিল,আপনিকিসত্যিই ওকে ভালোবাসেন, নাকি অন্য কিছুকে।।।
কথাটা বলে মেয়েটাও চলে গেল।।
↓
রাস্তায় শ্রাবনী ভাবতেছে→
আকাশ দের মত ছেলেদের ভালোবাসা যায় না। তাঁরা মেয়েদের নিয়ে খেলা করে, কালকে ওর চেয়ে সুন্দরী আর স্মার্ট মেয়ে পেলে যে সেটার কাছে চলে যাবে না তার কোন নিশ্চয়তা I
.
উৎস: অন্তরালে ঘটে যাওয়া হাজারো ঘটনার একটি (সংগৃহিত)
↓
পোষ্টটি কেমন লাগল
জানাতে ভুলবেন না।
.
(আর ভাল ভাল পোষ্ট পেতে আমাদের
পেজে লাইক কমেন্ট শেয়ার করে এক্টিভ থাকুন ,আপনাদের উৎসাহ
পেলে আর পোষ্ট নিয়ে হাজির হব)
সেরা একটা লেখা :
আমার বেতন ২২০০০ টাকা,কিন্তু আমি যে বাসায় থাকি ওটা বাড়িধারাতে
( ওল্ড ডি ও এস এইচ) ।এয়ারপোর্ট এর পূর্ব দিকে একটা বিশাল ফ্লাট।
লোকে শুনে হাসে, পিছে লোক ঘুসখোর বলে। আমি হাসি, গ্রাম থেকে এসেছিলাম একটা কাজ জুটাবো বলে। কিন্তু আমাকে খুঁজে নিয়েছে
বিশাল কোম্পানি। বছর খানেক পর আমার কাজের উপর খুশি হয়ে এই
বাড়িধারাতে ট্রান্সফার করে দেয়। সাথে এই অফিসিয়াল ফ্লাট। পুরো ঘটনা অনেক কে বলা হয়, যারা শুনে তারা ভ্রু কুঁচকায়। বাকিরা ঘুস খোর বলে। যেদিন এই বাসায় এসেছিলাম সেদিন শায়লা কে কোলে তুলে
ঘুরিয়েছিলাম, চুমু খেয়েছিলাম, মাঝরাতে দুজনে একসাথে নেচেছি খিক
খিক।
--------
রিহানের জন্ম হয়েছিল বাড়িধারা লেক ভিউ ক্লিনিকে। সবচেয়ে উন্নত সেবার এই ক্লিনিকে রিহান সোনার চামুচ মুখে জন্মেছিল। মধ্যবিত্তের কাছে সোনার চামুচ অধরা, বড্ড আদিক্ষেতা। আমার কাছে তা ছিল না। পুরো ১২ আনা সোনা দিয়ে বানিয়ে নিয়েছি সোনার চামুচ। জন্মের পর সেই চামুচে সামান্য মধু নিয়ে রিহানের মুখে দিয়েছিলাম। আমার সন্তান,
সোনার চামুচ না হলে চলবেই না। হুম রিহানের মা কখনো ওর ছবি তুলতে দিত না।কারন অজুহাতের সমান। কিন্তু আমি নাছোরবান্দা,
জন্মের প্রথম দিন থেকে রিহানের প্রথম বসা, হামাগুড়ি দেওয়া, প্রথম
দাঁত নিয়ে হাসি, নিজের পায়ে দাড়ানো, প্রথম মুখে ভাত, প্রথম স্কুল, কলেজ সব সব আমার ক্যামেরায় বন্দি করেছি। অহহ হ্যাঁ শায়লা একদিন
নিজেই একটা ছবি তুলেছিল রিহানের। যেদিন রিহান আমার পিঠে বসেছিল আর আমি গরুর মত হয়ে হাম্বা হাম্বা করে ওকে নিয়ে ঘুরছিলাম। উফফফ আমার দেখা সেরা ছবি ওটা। শায়লা বলতো ধুর ছাই,
আমাকে খুশি করতে মিথ্যা বলছো।
-----
রিহান যখন ২৬ শে পা দিল তখন আমার ৫২ বছর। এটা নিয়ে বেশ
একটা হাসির রোল পড়ে গিয়েছিল। বাবা ছেলে বয়সে দ্বিগুন।
সেই ক্লাস ফোরের অঙ্কের মত। শায়লা সে বছর বেশ ক্ষেপিয়েছিল
আমায়, তবে বেশি দিন পারে নি। রিহান হঠাৎ একটা মেয়েকে বিয়ে
করে নিয়ে এলো। শায়লা প্রচন্ড রেগে গিয়েছিল সেদিন। পারলে রিহান
কে জ্যান্ত পুতে ফেলবে। মনে খুব আপসেট হয়ে গেল শায়লা,
কিছুদিন তো খাওয়া, ঘুম ছেড়েই দিল। আমি বোঝালাম, ছেলে
মানুষ, পছন্দ হয়েছে, বিয়ে করেছে। কেন আমরাও তো এই ভাবেই
বিয়ে করেছি তাই না?? কিন্তু শায়লা বুঝলো না। তার উপর রিহানের বউয়ের অবাধ্য আচরন বাসার ভিতর বেশ খিটমিট পরিবেশের
সৃষ্টি করলো। রিহান একদিন প্রচন্ড রেগে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল,
সে এ বাসায় থাকবে না। অহহ হ্যাঁ একটু বলেই দেই পরে আমি কিস্তিতে
অফিস থেকে বাসাটা ৮ বছরে কিনে নিয়েছিলাম। সেই স্বপ্নের বাসায়
রিহান থাকবে না, যার স্মৃতি ঘিের এ বাসা সেই থাকবে না। আমি ওর পিঠ চেপে দিয়ে বললাম, রাগ করিস না। তোরা এ বাসায় থাক, আমাদের বরং বৃদ্ধাশ্রম এ দিয়ে আয়। এটাই তো চাচ্ছিস তাই না??
রিহান আমতা আমতা করে কিছু বলতে চাইলো। আমি হেসে বললাম,
কোথাকার বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হবে??
ও বলল, গুলশানে। অনেক ভাল একটা বৃদ্ধাশ্রম আছে। তোমরা ওখানে অনেক ভাল থাকবে। আমি হেসে আমার রুমে আসলাম,শায়লা
আমাকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠলো। ঠিক একই কান্না কেঁদেছিল
রিহান যখন জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিল। কি কান্না টাই করেছে,
""আমার রিহান কে ফিরিয়ে দাও বলে "
-----
বসুন্ধরার এই বৃদ্ধাশ্রমে মোট ৬৩ জন আশ্রিতা। যার মধ্যে আমরা
দুজন কমবয়েসি। এই ব্যাপার টা খুব মজা লাগতো, শায়লা কে বলতাম
দেখ কি কপাল এত জোয়ান বয়সে আমরা ঘর ছাড়া! শায়লা মুখ কালো করে নিত। কিন্তু একটা মেয়ে হাসতো। ওর নাম সাবিহা।এখানে থাকে।
সবার দেখাশুনা করে।কার কি লাগবে সেই দেখাশুনা করে। যখন
থেকে আমরা এসেছি এই মেয়েটাই আমাদের পরম কাছের হয়ে
গেছে। প্রায় দেখি সাবিহা শায়লার মাথায় তেল দিয়ে দেয়। আমি ওর মাথায় গুতা দিয়ে বলি কিরে ""তোর এই মাকে আবার আমার
কাছ থেকে কেড়ে নিবি না তো?? বুঝিস এই একটাই আমার
সম্পদ""। ও আমার পেটে গুতা দিয়ে বলতো, ইহহহ আমার কি সেই সাধ্য
আছে?? বলে খিল খিল করে হাসতো।
----------
গুনে গুনে ফের ২৮ বছর পেড়িয়েছি। ৮০ এর বুড়া আমি , বৃদ্ধাশ্রমের গ্রিল ধরে দাড়িয়ে আছি। বসুন্ধরার সেই বৃদ্ধাশ্রম থেকে ৫ মাস
পড়েই পালিয়েছি। তারপর এখানে এসেছি, এখন যেখানে আছি সেখানে
নাম বলবো না।পালিয়েছি কারন রিহান মাঝে মাঝে ন্যাকামি দেখাতো,
হারামীর ন্যাকামো আমার পছন্দ হতো না। ওর মায়ের সাথে কথা বলে চলে যেত। পালিয়ে আসার পর ওরা আমাকে খুজেঁছিল কিনা জানি না,
তবে খুজেঁ নি এটা সিওর। এই ২৮ বছরে আমার কাছে কিছু
বাকী নেই। ৯ বছর আগে হঠাৎ শায়লা ঘুমিয়ে গেল, এতো ডাকলাম
শুনলোই না, ঘুমোনোর আগে শুধু রিহান কে ডাকলো। আমার বুক
টা কেঁপে উঠলো,চোখে ঝাপসা দেখলাম, সাবিহা রোজ আসতো
আমাদের দেখতে। রোদ বৃষ্টি, ঝড়, এমন কোন দিন নেই যে সে আসেনি।
একদিন খুব জ্বর নিয়েও এসেছিল, শায়লা খুব বকেছিল সেদিন।
নিজের সন্তান যেখানে এত বড় বেঈমান সেখানে পর সন্তানের
মায়ায় শায়লা কেঁদে দিত। যেদিন শায়লা ঘুমিয়ে গেল, সাবিহা ২ বার সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিল।চিৎকার করে কেঁদে যাচ্ছিলো, মাটিতে বসে পা
দাপিয়ে আম্মা আম্মা বলে চেঁচাচ্ছিলো। সব কিছু ছেড়ে কবরে শুইয়ে
দিলাম শায়লা কে। এরপর মাঝে মাঝে আসতো সাবিহা, গম্ভীর ভাবে কথা বলতো, শায়লার সব কাপর ও নিয়ে গিয়েছিল, আমার কাছে ছিল শুধু রিহানের ফটো এলবাম। বছর দুয়েক পরে টানা ১ মাস আসলো না সাবিহা, খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম। একদিন এক ছোকড়া গোছের
ছেলে এসে একটা চিঠি দিল। আর বলল, সাবিহা বুবু দিয়েছে।
আমি বললাম ও কই? আসে না যে?
ছেলেটা মাথা নিচু করে বলল, বুবু ২৫ দিন আগে রোড
এক্সিডেন্ট মারা গেছে। ওর জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার সময় এই
চিঠি পাওয়া গেছে, আর এই ঠিকানা। বলেই ছেলেটা চলে গেল,
আমি বুকে হাত দিয়ে ঠোট চেপে ধরলাম..... বাহ সাবিত্রি বাহ
শায়লা। বাহ!! তোরাও আমায় ছেড়ে চলে গেলি!
-------------
হঠাৎ একটা গাড়ির হর্নে সেদিকে তাকালাম। মার্সিডিজ বেঞ্জ। এই
গাড়িটা আমার সবচেয়ে পছন্দ, কখনো কেনার সামর্থ্য হয়
নি, তবে একে দুর থেকেই দেখলেই চিনে ফেলি। গাড়ির সামনের সিট
থেকে একটা ২৫/২৬ এর ছোকড়া নামলো। চোখে সিওর গুচ্ছি এর সানগ্লাস,বড় বিরক্তিকর আমার কাছে, তাই দেখলেই বুঝতে পারি।
ছেলেটা গাড়ির দরজা খুলে দিল। একটা মাঝ বয়েসি লোক,পাঞ্জাবি
পড়া আর মহিলা বের হলো। একটু কাছে আসতেই খুব চিনলাম লোকটা কে... গ্রিলে ছেড়ে হাটা দিলাম তার দিকে, সামনে গিয়ে পাঞ্জাবির
কলার চিপে ধরে দুটো থাপ্পর দিব, যেটা আমাকে আরো ২৮ বছর
আগে দেওয়া উচিত ছিল। আর প্রশ্ন করবো "" আজ কেমন
লাগছে রে রিহান ?"""। আমি জানি ও আমার থাপ্পর
খেয়ে কান্না করবে না, ও কাঁদবে আমার প্রশ্ন শুনে।
কিন্তু আমি ওকে ক্ষমা করবো না.........
-সংগৃহীত ( যেখান থেকে নিয়েছে সেখানেও সংগৃহিত লিখাই ছিলো! )
सदस्यता लें
संदेश (Atom)