शुक्रवार, 3 जून 2016

ধুসর আধার কালো...


জোনাথন ঘুম থেকে উঠে দেখলো মেয়েটি ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে।ঐ প্রবল পাগলামির পর কখন যে দুজন ঘুমিয়ে পড়েছে নিজেরাও জানে না।তখন জোনাথনের মাথায় আসেনি,মেয়েটা কে?কোথ থেকে এলো।কিন্তু এখন সব নিয়ে ও ভাবছে।ভাবছে মেয়েটা আসলে কে?ও আলতো করে বিছানা থেকে উঠে পড়লো।একটা প্যান্ট পায়ে গলিয়ে পড়ে নিলো।বাইরে বেরিয়ে জোনাথন দেখলো বিকেল হয়ে এসছে।ওলেকের জলে হাতমুখ ধুলো।তারপর আবার কটেজে যখন ফিরে আসলো তখন দেখলো মেয়েটা বিছানায় উঠে বসে আছে।তার বসার মধ্যে একরকম মোহনীয়তা বিরাজ করছে।
মেয়েটি নরম স্বরে বললো: কি সোনা,ডাকোনি কেনো আমায়।জোনাথন অসস্তি নিয়ে দাড়িয়ে থাকলো।কথা বললো না কোনো।মেয়েটি এবার চিন্তিত হয়ে বললো:কি হয়েছে তোমার?
এবার জোনাথন আস্তে করে বলে উঠলো,কে তুমি?
মেয়েটি অবাক হয়ে বললো: আমি কে মানে?আমি তোমার বিয়ে করা বউ।
জোনাথন শুনে বজ্রাহত হয়ে গেলো।ওর চোখ দুটি কোটর থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে।ও ভাবছে আমিতো বিয়েই করিনি।এই মেয়ে কিভাবে আমার বউ হয়।ও কাপা কাপা কন্ঠে বললো:আমি একলা মানুষ।আমি কাউকে বিয়ে করিনি।
মেয়েটি এবার আশসস্ত হয়ে বললো: বুঝেছি আজ তোমার উপর অনেক ধকল গেছে।বলে মেয়েটি মুচকি হাসলো।তারপর বললো:তুমি বসো আমি চা করে আনছি।জোনাথন আবার নির্বাক হয়ে গেলো।এতো সুন্দর কোনো মানুষের শরীর হয়?এই মেয়েতো দেবী!!!
জোনাথন ওর চমক কাটিয়ে ভাবতে লাগলো ও কবে বিয়ে করেছে।ছোটবেলায় অ্যারিজোনায় থাকতে একবার এক মেয়েকে মিথ্যা মিথ্যা বিয়ে করেছিলো তাও তখনও বোঝার বয়স হয়নি সবকিছু।তারপর যখন কিশোর ছিল তখন আরেকটা মেয়েকে ভালো লেগেছিলো।ব্যাস্,এইটুকুই আর কিছুই হয়নি ওর জীবনে।কিন্তু আজকে চেনা নেই জানা নেই হুট করে একজনের সাথে সরাসরি বিছানায়!!!ও ভাবছে মেয়েটা কোনো বেশ্যা হতে পারে না কারন ওর চোখ দুটি পবিত্রতায় ভরা।তাহলে কে এই মেয়ে?ও ভাবতেই ভাবতেই মেয়েটি ঘরে চলে এলো চা নিয়ে।ও দেখলো মেয়েটি এর মধ্যে কাপড়ও পড়ে নিয়েছে।ও মেয়েটিকে বললো : তুমি কাপড় পেলে কোথায়?মেয়েটি বললো : ভালোকথা মনে করেছো তুমি।আমার কিন্তু কাপড় নেই।কাল বাজারে যাবে কিছু জিনিসপত্রের সাথে আমার জন্য কাপড় নিয়ে আসবে।আমি তোমায় লিস্টি দিয়ে দেবো।জোনাথন দেখলো মেয়েটি খুব সরল।সহজ ভঙ্গিতে কথা বলছে যেনো ও মেয়েটির কত্তদিনের চেনা।ও মাথা নিচু করে বললো :তোমার নাম যেনো কি?
মেয়েটি এবার একটু হেসে বললো : ইস্টিনা ম্যারিনা।
জোনাথন এবার মেয়েটির মুখের দিকে তাকালো। ওর মনে হলো মেয়েটির রূপের আলোয় ওর ঘর আলোকিত হয়ে আছে।ম্যারিনা লজ্জা পেয়ে বললো :কি দেখছো অমন করে।জোনাথন তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো যে,এ মেয়েকে ও বিয়ে করুক আর নাই করুক এই মেয়েই ওর স্ত্রী।
সন্ধ্যার পর থেকেই ম্যারিনাকে কাছে পাবার জন্য জোনাথন অস্থির হয়ে পড়লো।কিন্তু ম্যারিনা আছে তার আর জোনাথনে ছোট্ট সংসারটা গুছিয়ে রাখার প্ল্যান করার মাঝে।ম্যারিনা জোনাথনকে বলছে: কটেজের সাথে একটা এটাচড বাথরুম লাগবে।খাটটা আরেকটু বড় করা লাগবে।রান্না ঘরের পাশে ছোট্ট একটা রুম লাগবে মাংস রাখার জন্য।জোনাথনের এসবের প্রতি কোনো মনযোগ নেই।ও শুধু মাথা নাড়াচ্ছে।জোনাথন ম্যারিনার পিছে গিয়ে বসে ওর কোমরে হাত রাখলো।তারপর ঘাড়ে চুমু দিতে লাগলো।ম্যারিনা এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে জোনাথনকে বললো :ধূর!!কি শুরু করলে তুমি!!!আমার অনেক কাজ আছে।আর সারা রাততো পড়েই আছে,তখন যতো খুশি চুমু দিয়ো।বলে ম্যারিনা উঠে চলে গেলো স্টোভের কাছে।সাপার চড়াবে বলে।জোনাথন তারপরও ওর পিছু ছাড়লো না।ওরা কাজের ফাকে ফাকে কথা বলতে লাগলো।
তোমার আমার সাথে থাকতে কষ্টো হবে না?জোনাথন মায়াভরে জিঙ্গেস করলো।ম্যারিনা বললো:না।একদম না।আর আমারতো এই পৃথিবীতে কেউ নেই,তুমিতো জানোই।তুমিই আমার সব।আর আমি জানি তুমি আমাকে কখনো কষ্টো দেবে না।
জোনাথন তখনই ঠিক করলো এই মেয়েটাকে সে কখনো কষ্টো দেবে না।
সাপারের পর জোনাথন লেকের ধারে একটু বসলো।সাপারটা চমৎকার ছিলো।মেয়েটা কি সুন্দর স্বপ্ন দেখছে।সংসার করবে।আর মেয়েটার জন্য জোনাথনও এখন স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে।ম্যারিনা কটেজের দড়জায় দাড়িয়ে ডাকছে ওকে। ও বললো: কি হয়েছে?ম্যারিনা চেচিয়ে বললো:বাইরে প্রচন্ড বাতাস ভেতরে এসো।ও বললো :আমি একটু পড়ে আসছি।ম্যারিন চলে গেলো।মনে হলে ভেঙছি কেটেই চলে গেলো।ও ভাবলো জীবনটা কত সুন্দর,কত্ত সুন্দর!!!
জোনাথন কিছুক্ষন পর কটেজে ফিরলো।দড়জাটা চাপানো ছিলো।ও ভেতরে ঢুকে বন্ধ করে দিলো সেটা।ও দেখলো ম্যারিনা খাটের বসে আছে ওকে দেখেই বলা শুরু করে দিলো কেনো এই কনকনে ঠান্ডা বাতাসের মধ্যে বের হতে হলো তোমায়?ও কোনো কথা না বলে ছুটে এসে ম্যারিনার চিবুক দুহাতে ধরে ওর ঠোটে ঠোট রাখলো।চুষে ম্যারিনার লাল ঠোট সাদা বানিয়ে দিলো ও।ম্যারিনা কপট রাগের সূরে বললো : ড্রাকুলা!!
জোনাথনের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে।সে ম্যারিনাকে প্রবলভাবে ভাবে ঝাপটে ধরে ম্যারিনাকে শুইয়ে দিয়ে ম্যারিনার গালে,ঠোটে,চোখে কপালে চুমু দিতে লাগলো।একসময় জোনাথন প্রবেল আবেগে ম্যারিনার নরম বুকে ওর মুখ ডোবালো।
বাইরে বাতাসের প্রবল প্রলয় নৃত্য চলছে।বহুদূরে কোনো একটা নেকড়ে ডেকে উঠে।উউউউউউ....রাতের নিস্তবদতা ভেঙে খান খান হয়ে গেলো তার এই ডাকে।সে এই রাতকে ডাকছে.........

এক বিকেলের চিঠি


(১)
উড়ো পাতার মেঘের ভাজে পুরে, আমি একদিন কি ভেবে
আমার গল্পগুলোকে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম তার কাছে।
গল্পগুলো ঠিক গল্প নয়, জানো তো... নিতান্তই দৈনন্দিন
টুকিটাকি। এই তো সেদিন, আলগোছে পাতা উল্টিয়ে
দেখি, এক কোণে লিখে রেখেছি সেদিনকার বাজার দর।
কুচো চিংড়ি আধসের ১০০ টাকা! কুচো চিংড়ির দরদাম
জেনে সে কি করবে এটা কিছুতেই মাথায় আসে নি! কি
জানি কি সব আবোল তাবোল লিখি!
তবে চিঠিগুলো কিন্তু তাকেই লেখা। এই যেমন ধরো
বিকেল বেলায় অলস বিছানায় গা এলিয়ে বসে থাকতে
থাকতে লিখে ফেলেছি দু'কলম! মাঝে মাঝে গভীর
রাত্তিরে ঘুম ভেঙে চোখ কচলাতে কচলাতে লিখেছি,
"আজকের চাঁদটা মারকুটে ধরণের সুন্দর!" তারপর ওই যে ঐ
দিন, যেদিন সবাই দোর বেঁধে কোথায় যেনো গেলো!
সেদিন লিখেছিলাম নিষিদ্ধ চিঠি। দুয়ার বন্ধ রেখে
লুকোচুরি খেলার গল্প! পেছনের চিঠি আমার আবার
উল্টেপাল্টে পড়ার অভ্যেস! মাঝে মাঝে নিজেই বুঝে
উঠতে পারি না, হতচ্ছাড়া কথাগুলো কেন লিখেছিলাম,
কি ভেবে এতো মান-অভিমান, উচ্ছ্বাস... মাঝে মাঝে
ঝগড়া! সবটাই একপক্ষীয়, ছেলে মানুষী! আয়নার সামনে
দাঁড়িয়ে নাটকের পার্ট মুখস্থ করার মতো। কেউ দেখছে
না, জানছে না... পুরোটাই ন্যাকামো। অথচ লেখার সময়
এসব কিন্তু একদম মাথায় আসে না! বরং মনে হয়, এই
কথাগুলো তাকে না বললে চলবে? আমি বাঁচবো, লুকিয়ে
রেখে??
সেই চিঠিগুলো একদিন আমি য়্যাত্ত বড়ো এক খাকি
রঙের খামে পুরে পাঠিয়ে দিলাম। পাঠানোর আগে মন
খচখচ করছিলো। এইসব লেখালেখি, সে যদি না বোঝে?
যদি বোকা বোকা ভাবে? এলোমেলোই তো সব। কোন
পুকুরে গা ডোবানো হলো, কবে কখন মেঘ হয়েছিলো,
মায়ের ঘুমের সুযোগে পেটরা ভেঙে টাকা চুরি করে
প্রজাপতি কিনেছিলাম, এইসব কি বলার মতো?
এলোমেলো নয়? তবু সাহস করে পাঠিয়ে দিলাম। কি আর
হবে? বড়োজোর ধুত্তোরি ফালতু... বলে ছুড়ে ফেলে
দেবে! তাতেই বা আমার কি? আমি তো সেটা দেখছি না!
তবে হ্যা। দেখলে খানিকটা কষ্ট পেতাম বৈকী! কত কত
কালি ফুরিয়ে, মন কুড়িয়ে খুঁজে আনা শব্দ! একটুও কি
লাগতো না?? তাই পোষ্ট বাক্সই সই। পাঠিয়ে দিলাম। সে
যেয়ে পৌছে যাবে জায়গামতন।
ভাবছো হয়তো, খাকি কেন? খামের রঙ রঙিন কেন নয়??
না বাবা! আমার লেখার এতো রংধনু রঙ, খামখানা বরং
বিবর্ণই থাকুক। লেখা ফেলে খাম ছুঁয়ে বসে থাকলে
চলবে?? আমার অবশ্য উত্তর চাইনা। এক দেয়ালের চিঠি
তো! পাঠিয়েই ভুলে গেছি। নাহ, ভুলিনি অবশ্য, তাহলে
তোমায় বলতাম কি করে?? তবে হুম, উত্তরের প্রত্যাশা না
করা চিঠি, ভুলে যাওয়াই সুবিধা জনক।
যাই হোক। এই চিঠি চিঠি করে প্যাচাচ্ছি তখন থেকে।
চিঠি না কিন্তু ঠিক, দৈনন্দিন টুকিটাকি...
(২)
গল্পগুলো পাঠিয়ে দিয়ে স্বস্তিতে নেই একদম। রোজ মনে
হয়, খুব ভুল হয়ে গেছে! বাস থেকে নেমে প্রতিদিন পোষ্ট
অফিসের দরজায় দাঁড়িয়ে ভাবি, আজ একটু খোঁজ নিয়ে
আসি। হয়তো ওরা পাঠাতে ভুলে গেছে! একগাদা ফাইল,
কাগজের তোড়ায় হয়তো এলোমেলো পড়ে আছে আমার
গল্প গুলো! টুক করে তুলে ব্যাগে পুরে ফেরত নিয়ে আসবো
তবে। ভয় হয় যে খুব! হতচ্ছাড়া শব্দগুলো যদি বেঈমানী
করে? মানুষটা যদি ভুল বোঝে? যদি সামান্য খানিকটা
বুঝে বাকিটা উলটো করে ভেবে নেয়? যদি অবজ্ঞার
হাসি হাসে?? বন্ধুদের আড্ডায় চেঁচিয়ে পড়ে বলে, "দেখ
দেখ... কি লিখেছে বুদ্ধুটা! নীল দেয়ালের ঘরে নাকি
লাল-সাদার সুখ! হাহাহা, কাব্যিক, আতেল। চোখ খুলেই
ভুলভাল স্বপ্ন দেখে! সুখ আবার কি রে? কই পাওয়া যায়?
দাম কতো? এতো স্বপ্ন দেখাদেখি? ছ্যাহ, পাগল!!"
কি করে সইবো, আমি? তারচেয়ে আমার কাছেই থাকতো
ওরা... যত্নে, গোপনে!
আবার লোভও তো হয়! হয়তো সে খুব করে হাসবে, বোকা
বোকা হাসি। তারপর ফিরতি ট্রেনেই রওনা দেবে...
হাতভর্তি কাঁঠালচাপা নিয়ে! আমার ছোট্ট ঘরটা সেই
অদ্ভুত সুবাসে মৌ মৌ করবে। খুব, খুব, খু-ব করে বকুনী
খেয়ে নাক চোখের জলে হাবুডুবু খাবো। তারপর ভোর ছুঁই
ছুঁই রাতে দূর থেকে হাসির শব্দও শুনবে কেউ কেউ! কত
কিছুই তো ঘটে... নভেলে, মুভিতে! আমার গল্পগুলোর
স্ক্রিপ্ট এর শেষ পাতায় হয়তো মিলনাত্মক সমাপ্তি
লেখা আছে... হতে পারে না??
উফ কি লোভী, নচ্ছার, পাজী আমি!! না??
চিঠিগুলো... উফ আবার সেই একই ভুলভাল বকছি। চিঠি না
তো... দৈনন্দিন টু্কিটাকি...
(৩)
অনেকগুলো দিন ফুরিয়ে গেছে। কিছু জবাব আসে নি।
ভীষণ বোকা লাগে নিজেকে। তবে কি সে এড়িয়েই
গেলো পুরোটুকু। হেসে ছুঁড়েই দিলো? হতে পারে। কিইবা
ছিলো, ওতে? দুটো বকুলের মালা... তাও শুকিয়ে কাঠ।
একটা গোলাপ পাপড়ি, হয়তো মাঝখান থেকে ভেঙে
গেছে পাপড়ি টা। আর টুপ করে ঝরে যাওয়া দুফোটা
চোখের জল। সে তো সামান্য কিছুটা লেখা লেপ্টে
দিয়ে শুষে নিয়েছে কাগজের ভাঁজ।
আবার একটু করে হতচ্ছাড়া মনটা বলে ওঠে, "আরে, পোষ্ট
বক্সে কি বিশ্বাস আছে আজকাল? হয়তো ওরা গরিমসী
করে মাস পার করে দিচ্ছে! দেখো গিয়ে, পিওন ব্যাটা
ছুটিতে গেছে। ফিরলেই ক্রিং ক্রিং সাইকেলে
গল্পগুলো পৌছে দেবে ঠিক মানুষটার হাতে। আরো
খানিকটা ধৈর্য্য ধরো! এতো অস্থির হলে চলে??"
বলছি অবশ্য গল্প। আসলে কিন্তু দৈনন্দিন টুকিটাকি...
(৪)
খামটা ফেরত এসেছে আজ বিকেলে। প্রাপকের
ঠিকানায় নাকি কেউ আজকাল আর থাকে না। চিঠিটার
আঠা খোলা হয় নি, একদম অমনি আছে। ঠিক যেমনটা
আমি লাল বাক্সটায় ফেলেছিলাম। উফ... কি ভুলো মন
আমার... আবার চিঠি বলছি। এ কি চিঠি?? এ আমার
জীবন। খাকি রঙের বিবর্ণ খামে... আমার পুরোটুকু জীবন।
---লিখেছেন - তৃপ্ত সুপ্ত

"ভালবাসা,তোমায় দিলাম ছুটি"

ফোনটা ভাইব্রেট করেই চলেছে । স্ক্রিনের
দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি । হাত কাঁপছে । এত
দিন,এতবছর পর আবার সেই নাম্বার থেকে ফোন
এসেছে বিশ্বাস হচ্ছে না । আজও
নাম্বারটা দেখে হৃদস্পন্দন কয়েকগুণ বেড়ে যায় । মনের
মাঝে প্রবল ঝড় বয়ে যায় । শেষপর্যন্ত রিসিভ
করে ফেল্লাম । ওপাশ থেকে ভেসে এল সেই পরিচিত
কন্ঠস্বর । এতবছর পরও একটুও বদলায়নি । সেই
আগের মতই আছে ....
:হ্যালো ........
..............................
কি হল? কিছু বলছ না যে?
:না আসলে পাঁচ বছর পর এই নাম্বার থেকে ফোন
আশা করিনি । তাই বুঝতে পারছিনা যে কি বলব ।
:কয়েকদিন থেকেই তোমার কথা খুব মনে পড়ছিল ।
কিন্তু ফোন করার ঠিক সাহস পাচ্ছিলাম না । কাল
থেকে তোমার কন্ঠ শোনার খুব ইচ্ছে করছিল । তাই
আজ সাহস করে ফোনটা দিয়েই দিলাম । কেমন আছ
তুমি ?
:মানুষ বদলে যায় কিন্তু তাদের কন্ঠ বদলায়না । হুম
আছি নিজের মত করে । নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত আছি ।
:জিঞ্জেস করবেনা আমি কেমন আছি ?
:উহু,প্রয়োজন নেই । কিছু কিছু মানুষ
আছে যারা সবসময় ভাল থাকে । তুমি হচ্ছ তাদের
একজন ।
:(ওপাশে কিছুক্ষণ নীরবতা .......) আমার
কথা মনে পড়েনি তোমার ?
:হ্যা পড়েছে । অনেক মনে পড়েছে । যথন দিনের পর
দিন না খেয়ে থাকতাম তখন মনে পড়ত "তুমি ঠিকমত
খাচ্ছ তো?" যখন রাতের পর রাত
না ঘুমিয়ে,কেঁদে কেঁদে অসুস্থ হয়ে পড়তাম তখন
মনে পড়ত "তুমি সুস্থ আছ তো?" যখন কোন
আনন্দোত্সবে সবাই হইচই আর আনন্দে মেতে উঠত
আর আমি ঘরের দরজা বন্ধ
করে অন্ধকারে বসে থাকতাম তখন মনে পড়ত
"তুমি সবারসাথে খুশি আর আনন্দে মেতে উঠছ তো?"
যখন আয়নায় নিজের অযত্ন অবহেলায়
শুকিয়ে যাওয়া চেহারাটার দিকে তাকাতাম তখন
মনে পড়ত "তুমি নিশ্চই আরো সুন্দর হয়ে গেছ ।"
একসময় অনেক মনে পড়েছে । এখন আর পড়ে না । এখন
এত সময় কই এগুলো মনে পড়ার?
:(ওপাশে আবার নিরবতা ......)
আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না?
:ক্ষমা তো আমি তোমাকে পাঁচ বছর আগেই
করে দিয়েছিলাম । তোমায় ক্ষমা না করলে আমার
মনে তোমার দেয়া কষ্টগুলোর ক্ষত কোনভাবেই
শুকাত না । আচ্ছা এখন তাহলে রাখি । এখন আমার
আকাশ দেখার সময় । প্রতিদিন রাতে এইসময়
আমি আকাশ দেখি । আকাশের সাথে কথা বলি ।
আকাশ কখনো আমার সাথে ছলনা করেনা ।
প্রতিরাতে সে তারার ঝুলি নিয়ে আমার সামনে হাজির
হয় । আমি কথা বলি সে চুপচাপ শোনে । একটুও
বিরক্ত হয়না ।
:......একরাত আকাশের সাথে কথা না বল্লে হয় না?
আমাদের কথা থেকে আকাশের কথা কি খুব
বেশি জরুরী?
:আপাতত তাই । আমার চরম অসহায়ত্ব আর
একাকিত্বের সময় এই আকাশ আমায় সঙ্গ দিয়েছে ।
যে পাঁচ বছর আমায় দূরে সরিয়ে রেখেছিল তার জন্য
আমি আমার পাঁচ বছরের
পাশে থাকা সঙ্গীকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবনা ।
আচ্ছা আমি এখন যাব । রাতের আকাশ আমার জন্য
অপেক্ষা করছে । আজ খুব সুন্দর একটা চাঁদও
উঠেছে আকাশে । আজ চাঁদের সাথেও কথা বলব ......
ফোনটা কেটে দিলাম । বারান্দায় এসে দাড়ালাম ।
আকাশের বুকে গোল একটা চাঁদ উঠেছে ।
তাকিয়ে আছি । খুব কষ্ট হচ্ছে । সেই পাঁচবছর আগের
মত কষ্ট যখন তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে ।
কি দোষ ছিল আমার?কেন চলে গিয়েছিলে?আজ ও
তা আমি জানিনা । তারপরও অটুট
বিশ্বাস,আশা ধরে রেখেছিলাম একদিন তুমি আসবে ।
আমি অপেক্ষা করব । করেছি,অনেক অপেক্ষা করেছি ।
ভেবেছিলাম যেদিন তোমার ফোন
আসবে খুশিতে চিত্কার দেব । তোমার
পানে ছুটে চলে যাব । দিন যায়,মাস যায়,বছর যায়
কিন্তু তুমি আসনা । ভার্সিটি পাশ করার দু বছর
হয়ে গেল । বাবা আমার আমাকে অনেক ভালবাসে ।
সেই বাবাকে পর্যন্ত বলে দিলাম বিয়ে করবনা ।
বাবার দীর্ঘঃশ্বাস,দুঃখভরাক্রান্ত মন সবই
উপেক্ষা করতাম । ঠিক পাঁচমাস আগে বাবা অনেক
অসুস্থ হয়ে গেল । ডাক্তার বল্লেন মাইনর এট্যাক ।
এই বয়সে এত টেনশন ওনার সাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ।
বাবার অসুস্থতার জন্য কোন না কোন
ভাবে আমি দায়ী । কারণ বাবার সব টেনশন ছিল
আমাকে নিয়ে । সারাদিন বাবার হাত
ধরে বসে থাকতাম । বেশ কয়েকদিন পর বাবা একটু
সুস্থ হয়ে উঠলেন । আমার মাথায় হাত
বুলিয়ে বল্লেন,"মা,আমার জীবনের মনে হয় আর খুব
বেশি দিন বাকি নেই । আমি সবসময়
থেকে তোমাকে সুখী রাখতে চেয়েছি । মৃত্যুর আগেও
আমি তোমাকে সুখী দেখে যেতে চাই । এটাই এখন
আমার শেষ ইচ্ছা । একজন বাবা হিসেবে এর বেশি আর
কিইবা চাওয়ার থাকতে পারে?মা,তুমি একবার ভেবে দেখ
। ছেলেটা অনেক ভাল । তোমাকে অনেক
সুখে রাখবে আমার বিশ্বাস । কোন তাড়াহুড়ো নেই ।
ছেলেটার সাথে দেখা কর । তাকে বুঝার,চেনার
চেষ্টা কর । তোমার পছন্দ না হলে কোন
অসুবিধা নেই । শুধু তার সাথে দেখা করে,কথা বলে দেখ
।" না,পারলামনা আর বাবার কথা অমান্য করতে ।
তার আকুতি ভরা দৃষ্টি উপেক্ষা করতে । বাবার
পছন্দের ছেলেটার সাথে প্রথম দেখা করলাম দেড় মাস
আগে । ইঞ্জিনিয়ার । কিন্তু দেখে বোঝার উপায় নেই
। খুব সাধাসিধে ছা পোষা ধরণের মানুষ । কথার
মারপ্যাঁচ ধরতে পারেন না । লোকটার মা নেই । ওনার
মনে অনেক কষ্ট । একদিন
ভয়ে ভয়ে বল্লেন,"একটা কথা বলি?আপনার
মাঝে কোথায় যেন আমার মায়ের ছায়া আছে ।
মাকে চোখের সামনে দেখতে পাই নি কিন্তু অনুভব
করেছি । সরি আপনি রাগ করলেন না তো আমার
কথায়?" বলে লোকটা চোখের
পানি লুকোতে চেষ্টা করত । ব্যর্থ চেষ্টা ।
বাবাকে অনেক সম্মান করেন । প্রায় প্রতিদিন সময়
করে বাবাকে দেখতে আসেন । ওষুধ ঠিকমত খাচ্ছেন
কিনা,নিজের শরীরের যত্ন নিচ্ছেন কিনা আরো কত
কি । একদিন বাবার
সাথে দেখা করতে এসে আমাকে বেশ লাজুক
স্বরে বল্লেন,"ইয়ে মানে আপনার জন্য একটা জিনিষ
এনেছিলাম । আমি নিজে রান্না করেছি । অনেক
আগে থেকেই রান্না করতে করতে এখন
মোটামুটি ভালো রান্না করতে পারি । বিয়ের পর
আপনার কোন সমস্যা হবে না .......ওহ সরি আই
মিন যদি বিয়ে হয় । কই মাছের পাতুরি রান্না করেছি ।
অনেক কষ্ট এটা রান্না করা । আশা করি আপনার
ভালো লাগবে ।"
"আমি কই মাছ খাইনা" বেশ নির্লিপ্ত সুরে বললাম ।
উনি আহত স্বরে বল্লেন "ওহ সরি সরি । আমারি ভুল
হয়ে গেছে । আমার আসলে আপনাকে জিঞ্জেস
করা উচিত ছিল আপনার কি খেতে ভাল লাগে ।"
বড্ড দেরি করে ফেলেছ তুমি । গতকাল
বাবাকে বলে দিয়েছি যে বিয়েতে আমি রাজি । বাবার
চোখে যে খুশি আমি দেখেছি সেটা আজ তোমার
কাছে ফিরে গিয়ে নষ্ট করে দিতে পারতাম ।
হ্যা পারতাম বাবাকে যেয়ে বলতে যে এই
বিয়ে আমি করবনা । পারতাম বাবাকে সেই লোকটার
সামনে ছোট করে দিতে । কিন্তু না,পারলাম না আমার
বাবার মনে কষ্ট দিতে । পারলামনা তাকে ছোট
করতে । তুমি যখন আমাকে কুকুর-বিড়ালের চাইতেও
বেশি অবহেলা করতে তখন এই
মানুষটা আমাকে রাজকুমারীর মত রাখত । আমার
খেয়াল রাখত । বল আজ কিভাবে পারি তোমার জন্য
তাকে কষ্ট দিতে?পারতাম তোমার
ভালবাসাকে বুকে জড়িয়ে সেই
সাধাসিধে লোকটাকে বলে দিতে যে,"সরি আপনাকে বিয়
পক্ষে সম্ভব না ।" পারতাম সেই
মা হারা একাকী লোকটার স্বপ্ন ভেঙে দিতে ।
হ্যা বলার পর থেকে লোকটা এক ঘন্টা পরপর ফোন
দিয়ে জিঞ্জেস করছে,"ইয়ে মানে বিয়ের
শাড়ী আপনি কবে কিনতে যাবেন?আপনাকে নিয়ে যাব ।
আমি আবার এগুলো একদম বুঝি না ।
আমি কিনলে সিওর আপনার পছন্দ হবে না ।"
"না মানে আবার ফোন করলাম জানার জন্য
যে আপনার আগের কালের ডিজাইনের গহনা পছন্দ
কিনা । আসলে আমার মার
দুটো বালা আমি আপনাকে দিতে চাচ্ছিলাম । অনেক
পুরোনো ডিজাইন । আজকালকার মেয়ে আপনি । তাই
ভাবলাম একবার জিঞ্জেস করে নেই যে আপনার পছন্দ
হবে কিনা ...।" পারতাম লোকটার এত আকাঙ্খা আর
উচ্ছ্বাস ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিতে । কিন্তু
না,পারলামনা এত স্বার্থপর হতে । তুমি তো অনেক
স্বার্থপর হতে পেরেছিলে,তাই তো আমার এত কষ্ট
আর ভালবাসাকে উপেক্ষা করে চলে গিয়েছিলে শুধু একটু
মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করতে । কিন্তু
আমি পারিনা,পারবনা এত স্বার্থপর হতে ।
পারবনা নিজের ভালবাসার জন্য এই দুইজন মানুষের
ভালবাসা আর স্বপ্নকে ধুলিস্যাত্ করতে ।
হয়তো আজ তুমি ভাবছ আমি প্রতিশোধ নিয়েছি ।
তাই সই । তোমার
চোখে অপরাধী হয়ে আমি যদি এইদুইজন মানুষের
মুখে হাসি ফোটাতে পারি তাহলে তাই সই ।
যদি তুমি আরেকটু আগে আসতে তাহলে তোমার
ভালবাসাকে আপন করে নিতাম,যা এখন আর সম্ভব
নয় । অনেক দেরি হয়ে গেছে । এখন আর নিজের
ভালবাসা নয়,তাদের ভালবাসার প্রতিদান দেবার
পালা যারা আমাকে তোমার চেয়ে অনেক
বেশী ভালবাসে ।
আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি ।
চোখদুটো ঝাপসা হয়ে আসছে । দু
ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল চোখ দিয়ে ।
মনে মনে বল্লাম,

by-by- Färhäñä Fârîå

''শেষ চিঠি''



প্রিয় ছোট্ট হুরপরী,

কেমন আছো?হয়তোবা ভাল আবার হয়তোবা ভাল না।আমি জানি না।কারন সে কথাটুকুও আমি জানতে পারি নি।অনেক মনে পড়ছে তোমাকে জানো তাইতো এই sms এর যুগে চিঠি লিখে ফেললাম।সেই চিঠিতে অনেকদিনের জমানো কথাগুলো উজাড় করে লিখব এই চিন্তা।এখানে বলতে কেউ বাধা দিবে না।বলতেও ভয় লাগবে না।তুমি চিঠিটা পড়ে হাসবে,রাগবে আবার কাঁদবে।জ়ানো তোমার ভেজা চোখ আমার দেখতে ভাল লাগে না।লাগবে
না কোনদিন।কি করে লাগবে বল?আমি তোমার সকল দুঃখ নিজের করে নিয়েছি তোমাকে কাঁদাবার জন্যে নাকি?আজ কতদিন হয়ে গেল তোমার সেই সুন্দর গলাটা শুনি না।যে গলা প্রথম দিন শুনে আমি আপনমণে কেঁপে উঠেছিলাম।প্রথম দিন মনে করেছিলাম শীতে কেঁপে উঠেছিলাম।কিন্তু পরেরবার যখন কেঁপে উঠলাম তা তোমার গলা শুনে।ঢাকা থেকে এসে পড়ার পর আর তোমার গলা শুনতে পারি না।চাইলেও পারি না।তবুও বার বার try করি।ফোন দেই তোমাদের বাসায়।নাহ তুমি আর ফোন ধর না।হয় তোমার বাবা ধরেন,নয়তো মা,নয়তো ভাই।একসময় মনে হয় এইবার তুমি ধরবে ফোন আর আমি অভিমানী গলায় বলব,এতদিন কেন ফোন দাও নি?তুমি জান না আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারি না।কেন ফোন দাও নি?তা বাদ দাও তুমি কেমন আছো আগে বল?তুমি কেমন বল তো এটা তো অন্তত জানাবে যে তুমি ভাল আছ।নাহ তুমি ফোন ধর নি একবারো।আর আমিও বলতে পারি নি।তোমার মনে আছে একদিন মজা করে তোমার কিছু কথা আমি রেকর্ড করে রেখেছিলাম।সেই কথার মাঝে একটা কথা ছিল যা আমি বার বার তোমার কাছ থেকে।আমি তোমাকে ভালবাসি এই কথাটা।এখন এই রেকর্ড টাই আমার কত আপণ হয়ে গেছে।প্রতি রাতেই একবার করে শুনি আর বলি আমিও তোমাকে ভালবাসি।এই যে দেখ বলতে বলতে চোখ ভিজে আসছে।আচ্ছা তুমি কি আর বলবে না ফোন দিয়ে এই তুমি ওষুধ খাইছো?বুক ব্যাথাটা কমছে?তুমি কবে ফোন দিবে?তুমি কবে বলবে,এই যে আমি আসছি।অনেক সমস্যায় ছিলাম,মাফ করে দাও।আর আমি হয়তোবা কাদতে কাদতে মাফ করে দিব।আমি কখনো কি তোমার উপর রাগ করে থাকতে পেরেছি বল?আমি তোমাকে ছাড়া আর থাকতে পারছি না।তোমার মনে আছে একদিন তোমার বান্ধবী বলল তুমি আর আমাকে ভালবাসো না।এই কথা শুনে আর থাকতে পারি নি।এক দৌড়ে ফার্মেসী থেকে এক বন্ধুকে দিয়ে কিছু ঘুমের বড়ি কিনে ফেলছিলাম।তারপর আর কি পরীক্ষার মাঝে টানা দুই দিন ঘুম।স্যালাইন নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাই।সেদিন কি রাগ আমার উপর তোমার।আর সারাজীবনে যেন ঘুমের বড়ি না ধরি সেদিন প্রমিস করিয়েছিলে।নাহ আজো ধরি নি।অনেক রাত না ঘুমিয়ে থেকেছি তবুও ধরি নি।জানো আর গান গাইতে পারি না আগের মত।কাউকে শুনিয়ে আগের মত তৃপ্তি পাই না।আসলে তোমাকে পাওয়ার মত আমার কোন যোগ্যতা নেই তবুও আমি তোমাকে পাওয়ার সপ্ন দেখতাম তোমাকে নিয়ে।আমি ফেল করার পর ভেবেছিলাম তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে সবার মত।তাই ভয়ে তোমার ফোন টা পর্যন্ত ধরছিলাম না।কিন্তু যখন বললে,কোন সমস্যা নেই।সামনের বার ভাল করবে।কারণ এবার তোমার পাশে আমি থাকব।মনে একটা সাহস পেলাম।যখন সব বন্ধু ভুল বুঝে চলে গেল তখনো তুমি আমার পাশে।আমার সব কষ্ট তুমি নিয়ে নিলে।আর আজ কেউ নেই পাশে,তুমিও নেই।আজো সকালে তোমাকে নিয়ে সপ্ন দেখে ঘুমের মাঝে কেঁদে উঠেছিলাম।প্রতিদিন যেভাবে কেঁদে উঠি।ইদানিং তোমাকে নিয়ে অনেক বেশিই সপ্ন দেখছি।আমি কি তোমাকে হারাচ্ছি?আর পারছি না বলতে কি যে কষ্ট লাগছে বলে বোঝাতে পারব না।ঘুম থেকে উঠেই চোখ খুলেই ফোনটা দেখি সবার আগে।তুমি ফোন দিয়েছো কিনা তা দেখি।আমায় ক্ষমা করে দিও।আজ হয়তোবা একটু ঘুমাতে চাইব।আর ঘুমের মাঝেও তোমার ফোনের অপেক্ষায় থাকব। আমি জানি একদিন তুমি ফোন দিবে এক শীতের রাতে।আমি সব অভিমান রাগ ভুলে তোমাকে একটা গান শোনাতে চাইবো আর তুমি তা শুনবে,
চোখের জলে আকঁছি আমি,চোখের তারায় হাসি
অনেক ছবির মাঝে দেখ তোমার ছবি আঁকি
রাতকে লাগে আমার অন্যরকম সাদার মাঝে কালো
ঝাপসা চোখে দেখছি সবি কেমন এলোমেলো
ঘুমের খোঁজে হেঁটে বেড়াই মেঘের অলিগলি
পথ হারিয়ে সেই খেলাতে নিজের কাছেই হারি
ফোসকা গায়ে রোদ্রস্নানে আলোর মশাল জেলে
পাপড়ি গুলো মিলবে আবার হয়তো সময় পেলে
তোমার কি আজ রাতে একটু সময় হবে
বসবে এসে আমার পাশে আসবে আমার আমার কোলে
একটু ঘুম,একটু ঘুম একটু ঘুম
ভাল থেকো হুরপরী।
ইতি……….

চিঠিটা ভাঁজ করে বুকপকেটে রাখলাম।জানি না এই চিঠিটা পাবে কিনা ও।পাবে যখন কে জানে অনেক দূরে থাকব।যাই আজ রাতে অনেক কাজ আছে।একটু ঘুমাব।তার কোলে মাথা রেখে ঘুমাব।শান্তির ঘুম।অনেকদিনের জমানো ঘুম