''শেষ চিঠি''
by-Raufun Noor Ratul
প্রিয় ছোট্ট হুরপরী,
কেমন আছো?হয়তোবা
ভাল আবার হয়তোবা
ভাল না।আমি জানি
না।কারন সে কথাটুকুও আমি
জানতে পারি নি।অনেক মনে
পড়ছে তোমাকে জানো
তাইতো এই sms এর
যুগে চিঠি লিখে
ফেললাম।সেই চিঠিতে অনেকদিনের জমানো
কথাগুলো উজাড় করে
লিখব এই চিন্তা।এখানে বলতে
কেউ বাধা দিবে
না।বলতেও ভয় লাগবে
না।তুমি চিঠিটা পড়ে
হাসবে,রাগবে আবার
কাঁদবে।জ়ানো তোমার ভেজা
চোখ আমার দেখতে
ভাল লাগে না।লাগবে
ও না কোনদিন।কি করে
লাগবে বল?আমি
তোমার সকল দুঃখ
নিজের করে নিয়েছি
তোমাকে কাঁদাবার জন্যে
নাকি?আজ কতদিন
হয়ে গেল তোমার
সেই সুন্দর গলাটা
শুনি না।যে গলা
প্রথম দিন শুনে
আমি আপনমণে কেঁপে
উঠেছিলাম।প্রথম
দিন মনে করেছিলাম শীতে
কেঁপে উঠেছিলাম।কিন্তু পরেরবার যখন
কেঁপে উঠলাম তা
তোমার গলা শুনে।ঢাকা থেকে
এসে পড়ার পর
আর তোমার গলা
শুনতে পারি না।চাইলেও পারি
না।তবুও বার বার
try করি।ফোন দেই তোমাদের বাসায়।নাহ তুমি
আর ফোন ধর
না।হয় তোমার বাবা
ধরেন,নয়তো মা,নয়তো ভাই।একসময় মনে
হয় এইবার তুমি
ধরবে ফোন আর
আমি অভিমানী গলায়
বলব,এতদিন কেন
ফোন দাও নি?তুমি জান
না আমি তোমাকে
ছাড়া থাকতে পারি
না।কেন ফোন দাও
নি?তা বাদ
দাও তুমি কেমন
আছো আগে বল?তুমি কেমন
বল তো এটা
তো অন্তত জানাবে
যে তুমি ভাল
আছ।নাহ তুমি ফোন
ধর নি একবারো।আর আমিও
বলতে পারি নি।তোমার মনে
আছে একদিন মজা
করে তোমার কিছু
কথা আমি রেকর্ড
করে রেখেছিলাম।সেই কথার
মাঝে একটা কথা
ছিল যা আমি
বার বার তোমার
কাছ থেকে।আমি তোমাকে
ভালবাসি এই কথাটা।এখন এই
রেকর্ড টাই আমার
কত আপণ হয়ে
গেছে।প্রতি রাতেই একবার
করে শুনি আর
বলি আমিও তোমাকে
ভালবাসি।এই যে দেখ
বলতে বলতে চোখ
ভিজে আসছে।আচ্ছা তুমি
কি আর বলবে
না ফোন দিয়ে
এই তুমি ওষুধ
খাইছো?বুক ব্যাথাটা কমছে?তুমি কবে
ফোন দিবে?তুমি
কবে বলবে,এই
যে আমি আসছি।অনেক সমস্যায় ছিলাম,মাফ করে
দাও।আর আমি হয়তোবা
কাদতে কাদতে মাফ
করে দিব।আমি কখনো
কি তোমার উপর
রাগ করে থাকতে
পেরেছি বল?আমি
তোমাকে ছাড়া আর
থাকতে পারছি না।তোমার মনে
আছে একদিন তোমার
বান্ধবী বলল তুমি
আর আমাকে ভালবাসো না।এই
কথা শুনে আর
থাকতে পারি নি।এক
দৌড়ে ফার্মেসী থেকে
এক বন্ধুকে দিয়ে
কিছু ঘুমের বড়ি
কিনে ফেলছিলাম।তারপর আর
কি পরীক্ষার মাঝে
টানা দুই দিন
ঘুম।স্যালাইন নিয়ে পরীক্ষা দিতে
যাই।সেদিন কি রাগ
আমার উপর তোমার।আর সারাজীবনে যেন
ঘুমের বড়ি না
ধরি সেদিন প্রমিস
করিয়েছিলে।নাহ
আজো ধরি নি।অনেক রাত
না ঘুমিয়ে থেকেছি
তবুও ধরি নি।জানো আর
গান গাইতে পারি
না আগের মত।কাউকে শুনিয়ে
আগের মত তৃপ্তি
পাই না।আসলে তোমাকে
পাওয়ার মত আমার
কোন যোগ্যতা নেই
তবুও আমি তোমাকে
পাওয়ার সপ্ন দেখতাম
তোমাকে নিয়ে।আমি ফেল
করার পর ভেবেছিলাম তুমি
আমাকে ছেড়ে চলে
যাবে সবার মত।তাই
ভয়ে তোমার ফোন
টা পর্যন্ত ধরছিলাম না।কিন্তু যখন
বললে,কোন সমস্যা
নেই।সামনের বার ভাল
করবে।কারণ এবার তোমার
পাশে আমি থাকব।মনে একটা
সাহস পেলাম।যখন সব
বন্ধু ভুল বুঝে
চলে গেল তখনো
তুমি আমার পাশে।আমার সব
কষ্ট তুমি নিয়ে
নিলে।আর আজ কেউ
নেই পাশে,তুমিও
নেই।আজো সকালে তোমাকে
নিয়ে সপ্ন দেখে
ঘুমের মাঝে কেঁদে
উঠেছিলাম।প্রতিদিন
যেভাবে কেঁদে উঠি।ইদানিং তোমাকে
নিয়ে অনেক বেশিই
সপ্ন দেখছি।আমি কি
তোমাকে হারাচ্ছি?আর
পারছি না বলতে
কি যে কষ্ট
লাগছে বলে বোঝাতে
পারব না।ঘুম থেকে
উঠেই চোখ খুলেই
ফোনটা দেখি সবার
আগে।তুমি ফোন দিয়েছো
কিনা তা দেখি।আমায় ক্ষমা
করে দিও।আজ হয়তোবা
একটু ঘুমাতে চাইব।আর ঘুমের
মাঝেও তোমার ফোনের
অপেক্ষায় থাকব। আমি
জানি একদিন তুমি
ফোন দিবে এক
শীতের রাতে।আমি সব
অভিমান রাগ ভুলে
তোমাকে একটা গান
শোনাতে চাইবো আর
তুমি তা শুনবে,
‘চোখের জলে আকঁছি
আমি,চোখের তারায়
হাসি
অনেক ছবির মাঝে
দেখ তোমার ছবি
আঁকি
রাতকে লাগে আমার
অন্যরকম সাদার মাঝে
কালো
ঝাপসা চোখে দেখছি
সবি কেমন এলোমেলো
ঘুমের খোঁজে হেঁটে
বেড়াই মেঘের অলিগলি
পথ হারিয়ে সেই
খেলাতে নিজের কাছেই
হারি
ফোসকা গায়ে রোদ্রস্নানে আলোর
মশাল জেলে
পাপড়ি গুলো মিলবে
আবার হয়তো সময়
পেলে
তোমার কি আজ
রাতে একটু সময়
হবে
বসবে এসে আমার
পাশে আসবে আমার
আমার কোলে
একটু ঘুম,একটু
ঘুম একটু ঘুম’।
ভাল থেকো হুরপরী।
ইতি……….
চিঠিটা ভাঁজ করে
বুকপকেটে রাখলাম।জানি না
এই চিঠিটা পাবে
কিনা ও।পাবে যখন
কে জানে অনেক
দূরে থাকব।যাই আজ
রাতে অনেক কাজ
আছে।একটু ঘুমাব।তার কোলে
মাথা রেখে ঘুমাব।শান্তির ঘুম।অনেকদিনের জমানো
ঘুম।